1. bdweb24@gmail.com : admin :
  2. nemadmin@bongonewsbd24.com : :
  3. him@bdsoftinc.info : Staff Reporter : Staff Reporter
  4. info@wp-security.org : Security_64733 :
বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেন কাজী নজরুল ইসলাম। কয়রায় প্রীতি ফুটবল খেলায় সাবেক ছাত্রদল ফুটবল একাদশ বিজয়ী লংগদুতে নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ অভিযান, ইউপিডিএফ সদস্য নিহত গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ছাত্রদলের উদ্যোগ প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় স্বৈরাচারের দোসররা বিদেশি প্রভুদের সহযোগিতায় ষড়যন্ত্র করে বেড়াচ্ছে:আমিনুল হক নির্বাচন কমিশন ভবনে অগ্নি সচেতনতা বৃদ্ধিতে মহড়া করেছে ফায়ার সার্ভিস গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ট্রান্সফরমার চুরি করতে বিদু্যৎস্পৃষ্টে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মৃত্যৃ পাহাড়ে শান্তি রক্ষায় সম্প্রীতির মিছিলে বান্দরবান উদয়ন ডেন্টাল কলেজে আউটডোর ইনচার্জ হিসেবে ডা. মোহাইমিনুর রহমানের যোগদান আন্তর্জাতিক সাংবাদিক আইনি প্রতিকার ফাউন্ডেশনের উন্নয়নে জন্য দুই লক্ষ টাকার অনুদান দিলেন মো. আনোয়ার হোসাইনের

হাত ভেঙে দিয়েছে ছেলে, ঈদের দিন মা কাঁদছেন বৃদ্ধাশ্রমে

রিপোর্টার
  • আপডেট : শুক্রবার, ১৪ মে, ২০২১
  • ৭৮৫ বার দেখা হয়েছে

এতেই ক্ষান্ত হয়নি ছেলে এবং ছেলের বউ। মাকে বের করে দিয়েছে নিজের বাড়ি থেকেই। এরপর রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ভাঙ্গা হাত নিয়েই কাটিয়েছেন ৬ মাস। গত এক বছর ধরে শহরার ঠিকানা ঢাকার ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের একটি বৃদ্ধাশ্রমে।

ওই বৃদ্ধাশ্রমের তত্ত্বাবধায়ক বলেন, ‘হাত ভাঙা এবং অনেক বেশি অসুস্থ অবস্থায় শহরা বানুকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে পড়ে ছিলেন৷ সেখানে থেকে তাকে এক বছর আগে আমরা এই বৃদ্ধাশ্রমে নিয়ে এসেছি। এরপর তার চিকিৎসা করিয়েছি। এখন তার শরীর কিছুটা সুস্থ। কিন্তু ভাঙা হাতটি আর ভালো হয়নি তার।’

ঈদের দিনে কাছে নিজের জীবনের কষ্টমাখা স্মৃতিগুলো বলতে বলতে ডুকরে ডুকরে কাঁদছিলেন শহরা বানু। বলেন, ‘পোলাডা আমারে মারছে। হাত টা ভাংঙে দিছে। নাতিরাও মারতো। এখন তো ওরা ভালোই আছে।’

শহরা বানুর এমন কান্নাভরা কথাগুলো শুনছিলেন পাশে বেডে বসা হামেদা বেগম। কথা শেষ না হতেই হামেদা বলে উঠলেন, ‘ও রা কি মানুষ। ওরা মানুষ না জানোয়ার। মায়েরে মাইরা হাত ভেঙে দিছে।’

হামেদা বানুও বৃদ্ধাশ্রমের একজন বাসিন্দা। তার গ্রামের বাড়ি মঠবাড়িয়ায়। স্বামীর মৃত্যুর পরে ঠাঁই মেলেনি ছেলের সংসারে। রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর পথযাত্রী হচ্ছিলেন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে তাকে নিয়ে এসেছে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের কর্মীরা। এখন এটাই তার শেষ আশ্রয়স্থল।

সবুরা বেগম জোরে জোরে গান গাচ্ছিলেন তার নিজের বেডে শুয়ে শুয়েই। যদিও কি গান গাচ্ছিলেন সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল না।

কাছে যেতেই উঠে বসলেন তিনি৷ এক দৃষ্টিতে কীভাবে যেন তাকালেন। এরপর বললেন, ‘বাবা কেমন আছেন আপনারা।’

সবুরা বয়স ৭০ বছর। তিনি বহু দিন ধরে এখানে থাকছেন তিনি। সবুরা বেগম দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, ‘আমার জন্ম পুরান ঢাকায়। ওখানে মেলা সম্পত্তি। কিন্তু কেউ খোঁজ নেয়া না। ভাই, মাইয়া কেউ আসে না। ওরা মনে হয় ভাবছে আমি মইরা গেছি।’

বৃদ্ধাশ্রমের তত্ত্বাবধায়ক বলেন, ‘সবুরা বেগমকে বছর দেড়েক আগে সুত্রাপুর এলাকায় পড়ে থাকতে দেখে আমাদের খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে তাকে গিয়ে আমরা নিয়ে আসি।’

রাজধানীর কল্যাণপুর এলাকায় অসহায় ও আশ্রয়হীন বৃদ্ধদের জন্য ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার নামে এই প্রতিষ্ঠানে এখন সব মিলিয়ে ১২৫ জন নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে। সংস্থাটির মালিক মিল্টন সমাদ্দার দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, ‘আমার গ্রামের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর। এই যুগে অনেক সন্তানরা নিজের পিতা মাতাকে সময় দিতে চায় না। যান্ত্রিক সভ্যতা ও নিজেদের ব্যস্ততার কারণে অনেকেই ভুলতে বসেছে তাদের আপনজনদের। অসহায় ও আশ্রয়হীন এমন বৃদ্ধদের খুঁজে বের করাটা এখন আমার নেশা ও পেশা হয়ে গেছে। নিজের ব্যবসা থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে কুড়িয়ে পাওয়া বৃদ্ধদের ভরণপোষণ করি আমি। একই সঙ্গে মৃত্যৃর পর তাদের দাফন-কাফনের দায়িত্বও আমরা পালন করে থাকি। আমার স্ত্রী জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে চাকরি করেন। তার চাকরির অর্থও এখানেই ব্যয় করা হয়।’

মিন্টন বলেন, ‘আমি ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বৃদ্ধাশ্রমটি শুরু করেছিলাম। এখানে মোট ১২৫ জন বাবা মা এবং তাদের সাথে ১৮ জন শিশুও রয়েছে। আসলে মানুষ মানুষের জন্য। আমি নিজে এটা পরিকল্পনা করে করিনি। রাস্তায় পড়ে থাকা বৃদ্ধদের দেখে সহ্য হয়নি। আশ্রয় দিয়েছি। এভাবে একজন, দুজন করে আজ শতাধিক মানুষকে একই ছায়ায় রেখেছি। আমি মনে করি, মানুষ কখনো রাস্তায় পড়ে থাকতে পারে না। চেষ্টা করছি পরিচয়হীন, অজ্ঞাত, অসুস্থ, রাস্তায় পড়ে থাকা বৃদ্ধ এবং প্রতিবন্ধী ও অসহায় শিশুদের পাশে দাঁড়াতে।’

মিন্টন সমাদ্দার আরও বলেন, ‘এখন আমাদের নিজস্ব একটি জমি হয়েছে সাভারে। সেখানে একটি বিল্ডিং করবো আমরা। তবে বর্তমানে মুল সমস্যা হলো লাশ দাফন। এখানকার বৃদ্ধ বাবা মায়েরা মারা গেলে তাদের লাশ দাফন করতে অনেক অসুবিধা হয়। লাশগুলো যেন সরকার কবরস্থানে ফ্রি দাফন করতে পারি তার জন্য সিটি কপোরেশন, সমাজ সেবা অধিদপ্তরসহ অনেক জায়গায় আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। কেউই বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না।’

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ

© ২০২৩ bongonewsbd24.com