বিএনপি চেয়ারপারসন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) যেকোনো সময় তাকে চার্টার্ড বিমানে করে সিঙ্গাপুর হয়ে লন্ডন নেওয়া হতে পারে। সঙ্গে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দল এবং পরিবারের সদস্যরাও থাকবেন। খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়া অ্যাম্বুলেন্স রেডি রাখা হয়েছে।
এর আগে বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসায় খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার তার বিদেশ যাওয়ার জন্য সরকারের কাছে লিখিত আবেদন করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল সাংবাদিকদের কাছে জানান, সরকার এ ব্যাপারে ইতিবাচক রয়েছে এবং বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
গত ২৭ এপ্রিল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এবার কেয়ার হসপিটালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। গত সোমবার তার শ্বাসকষ্ট দেখা গেলে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তবে দলের সিনিয়র নেতারা এই বিষয়ে মুখ খুলছেন না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে যে আবেদন করা হয়েছে সেটা সরকার ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে। আবেদনটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রসেস করেই আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী খুবই উদার মানুষ এবং সবকিছু পজিটিভ দেখেন বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বিদেশে যেতে হলে আবার কোর্টের কোনো কিছু লাগবে কি না সেটাও তো ব্যাপার আছে। সেজন্যই আইনমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। তার কমেন্টস আসুক।
জামিনে থাকা খালেদা জিয়া বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো নিয়ে আগে থেকেই তোড়জোড় শুরু করে তার পরিবার। খালেদা জিয়ার পাসপোর্ট নবায়ন থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখাসহ সব কাজ গুছিয়ে আনা হয়েছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি দেখভাল করছেন। সরকারের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেলেই ভাই শামীম এস্কানদারকে নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হবেন বিএনপি প্রধান।
সূত্র জানায়, শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চায় পরিবার। এ জন্য গত সোমবার রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।
এর আগে গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি চিঠিও দেয়া হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে। তবে অত্যন্ত গোপনীয়তা ও সতর্কতার সঙ্গে সরকারের উচ্চ মহলে যোগাযোগ চলছে। কৌশলগত কারণে দুপক্ষের কেউই এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না।
গত ২৭ এপ্রিল রাতে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরদিন বিএনপি প্রধানের চিকিৎসার জন্য ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। আর গত সোমবার বিকালে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। এর আগে গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজেটিভ আসে।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান খালেদা জিয়া। সেখান থেকে এক মাসের মধ্যেই ফেরার কথা থাকলেও চিকিৎসায় সময় লাগায় দেশে ফিরতে দেরি হয়। ওই বছর ১৮ অক্টোবর দেশে ফেরেন তিনি।