বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: দাদির দায়ের করা মামলায় কারাবন্দি মায়ের মুক্তির দাবিতে দুগ্ধপোষ্য সহোদর গালিবকে (২) নিয়ে গত শনিবার সকালে (১৭ জুলাই) বরগুনার রাস্তায় অবস্থান নেয় শিশু আলিফ (১৩)। এরপর ওইদিন বিকেলে মানবিক কারণে রাস্তা থেকে তুলে এ শিশু সহোদরকে নিজ বাসায় আশ্রয় দেন বরগুনার স্থানীয় সাংবাদিক সোহেল হাফিজ।
কিন্তু মায়ের জামিন হওয়ার আগের রাতে (১৮ জুলাই) সোহেল হাফিজের আশ্রয়ে থাকা এই দুই সহোদরকে পৃথক করে বরগুনা জেলা প্রশাসন। সোহেল হাফিজের বাসা থেকে দুগ্ধপোষ্য শিশু গালিবকে পাঠানো হয় বরিশালের আগৈলঝাড়ার ছোটমনি শিশু নিবাসে। আর আলিফকে পাঠানো হয় বরগুনার শেখ রাসেল শিশু কিশোর পুনর্বাসন কেন্দ্রে।
সোমবার (১৯ জুলাই) সকালে কারাবন্দি ওই দুই শিশুর মা আনিতা জামানের জামিন মঞ্জুর করেন বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। পরে বিকেল ৪টার দিকে বরগুনা জেলা কারাগার থেকে কারামুক্ত হন তিনি।
আনিতা জামান যখন কারামুক্ত হন তখন তার দুই শিশু সন্তান বরিশাল ও বরগুনার ভিন্ন দুই কারাগারে বন্দি। এরপর কারামুক্ত হয়েই তিনি বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে দুই শিশু সন্তানকে ফিরে পেতে আকুতি জানান। এরপর রাতে বরিশালে থাকা দুগ্ধপোষ্য শিশু গালিবের সঙ্গে তার মায়ের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন সাংবাদিক সোহেল হাফিজ।
ফোনের ওপারে থাকা শিশু গালিবের আর্তচিৎকারের সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মঙ্গলবার (২০ জুলাই) বিকেলে সেই শিশু সন্তানকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয় প্রশাসন।এর আগে বরগুনার শেখ রাসেল শিশু কিশোর পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে গালিবকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় তার মা আনিতা জামানের কাছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা ও ছোটমনি নিবাসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুশান্ত বালা। তিনি জানান, আদালতের নির্দেশে গালিবকে তার মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বরগুনা জেলার সদর উপজেলার আয়লা-পাতাকাটা ইউনিয়নের খেজুরতলা গ্রামের বাসিন্দা মনিরুজ্জামান জুয়েলের সঙ্গে তার মা এবং বোনদের মধ্যে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছিল। বিরোধের সূত্র ধরে চলতি বছরের ২২ জুন মনিরুজ্জামান জুয়েলের মা আলেয়া বেগমকে মারধর করা হয়েছে অভিযোগ এনে ২৮ জুন থানায় মামলা করেন। মামলায় ছেলে মনিরুজ্জামান, পুত্রবধূ আনিতা জামান ও নাতি আলিফের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ আনেন। এ ঘটনায় ১৫ জুলাই আনিতা জামানকে কারাগারে পাঠান আদালত। মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশে মায়ের কাছে ফিরে যায় আলিফ-গালিব।