বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: রাজশাহীর বাগমারায় ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়ে স্কুলশিক্ষিকা এক মায়ের মত্যু হয়েছে। আগুন থেকে বাঁচতে তিনতলা থেকে লাফ দিয়ে তাঁর দুই ছেলে আহত হয়েছেন। তাঁরা দুই ভাই দগ্ধও হয়েছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজন।
শুক্রবার (৩০ জুন) ভোরে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হাসনিপুর গ্রামের মাদারীগঞ্জ বাজারের তিনতলা একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ৫ ঘণ্টার চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, রান্নাঘর থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
ওই স্কুলশিক্ষিকার নাম ফরিদা ইয়াসমিন (৪৫)। তিনি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার শিবপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং বাগমারার হাসনিপুর গ্রামের এজাজুল বাশার ওরফে স্বপনের স্ত্রী। তাঁদের আহত দুই সন্তান হলেন রাশেদুল বাশার (২৫) ও রাফিউল বাশার (১৮)।
তার স্বামী দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে বিশেষজ্ঞ এজাজুল বাসার। তাদের দুই অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। দুই ভাইয়ের শরীরের ৪৫ ভাগ পুড়ে গেছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। শুক্রবার সকালে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঈদুল আজহার দিন পরিবারের সবাই মিলে পশু কোরবানি করেন। রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে এজাজুল বাশার স্বপন তাদের শহরের বাসায় চলে যান। ওই শিক্ষিকা মা ও তার দুই সন্তান আলাদা আলাদা ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন।
স্বজন, প্রতিবেশী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতের খাবার খেয়ে দুই ছেলেকে নিয়ে তিনতলার বাসায় ঘুমিয়ে পড়েন স্কুলশিক্ষিকা ফরিদা ইয়াসমিন। ভোরে বাসার দোতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এ সময় আগুন পুরো বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। পরে প্রতিবেশীরা টের পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। তাঁদের চিৎকারে ও আগুনের শিখা দেখতে পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। তাঁরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে আগুন ছড়িয়ে যাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিলেন না লোকজন। পরে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হলে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। ততক্ষণে বাড়িতে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র ও মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী জাকিরুল ইসলাম বলেন, তাঁরা আগুন নেভানোর সময় দেখতে পান, তিনতলা থেকে দুই ভাই রাশেদুল ও রাফিউল দগ্ধ অবস্থায় লাফ দিয়ে নিচে পড়ে যান। দ্রুত তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর তাঁরা বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তিনতলার একটি কক্ষে স্কুলশিক্ষিকা ফরিদা ইয়াসমিনের পোড়া লাশ পান।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বাগমারা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মেহেদি হাসান প্রথম আলোকে বলেন, দুইতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। সেখানে রান্নার ব্যবস্থা ছিল। চুলার আগুন থেকেই মূলত আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।