বঙ্গবাজারে অগ্নিদুর্ঘটনার তথ্য : ৪ এপ্রিল ২০২৩
৪ এপ্রিল ভোরে ঢাকার বঙ্গবাজার মার্কেটে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। বঙ্গবাজার আদর্শ মার্কেট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা পুরো মার্কেটসহ বরিশাল প্লাজায়ও ছড়িয়ে পড়ে। সংবাদ পাওয়ার সময় ০৬-১০ ঘটিকা (জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ও ০১৭১৫-২৫৯৩৯৪ নম্বর-এর মাধ্যমে)। ২২টি ফায়ার স্টেশনের ৪৮টি ইউনিট আগুনে কাজ করে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে ১২-৩৬ ঘটিকায়। মোট ৬৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি তদন্ত সাপেক্ষ। এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ৮ জন আহত হয়েছেন, যারা ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। বিপুল পরিমাণ মানুষের ভিড়ে অগ্নিনির্বাপণ বিলম্বিত ও বাধাগ্রস্ত হয়।
উচ্ছৃঙ্খল জনতা ফায়ার সার্ভিসের ১১টি গাড়ি এবং অধিদপ্তরের ভেতরে প্রবেশ করে ইআরসিসি ভবন ও রিসিপশন ভবন ভাঙচুর করে এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের মারধর করে। বাইরে থেকেও উচ্ছৃঙ্খল লোকজন অধিদপ্তরের ভেতরে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। অগ্নিনির্বাপণের সময়ও আমাদের অনেক কর্মী মারধরের শিকার হন। পরে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যগণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
দুপুর ১টায় গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে ব্রিফ করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন, বিএসপি (বার), এনডিসি, পিএসসি, জি, এম ফিল। এ সময় তিনি দুঃখপ্রকাশ করে সকলের উদ্দেশে বলেন, আমাদের কর্মীরাতো নিজের জীবন দিয়ে আপনাদের রক্ষা করেন, তাদেরই কেন আঘাত করা হলো, কারা আঘাত করলো! এই উচ্ছৃঙ্খল লোকজন কারা? কেন তারা এমন আচরণ করলো!! আমাদের যেসব গাড়ি জাতীয় সম্পদ ও মূল্যবান জীবন রক্ষা করে, সেইসব গাড়ি কি উদ্দেশ্যে ভাঙচুর করা হলো?
এক প্রশ্নের জবাবে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এই দুর্ঘটনার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি তদন্ত কমিটি নিরূপণ করবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বঙ্গবাজার মার্কেটকে ২০১৯ সালে ফায়ার সার্ভিস ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে মার্কেটের বিভিন্ন স্থানে ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছিল। গণমাধ্যমে তার সংবাদও প্রচারিত হয়েছিল। এছাড়া তাদের বিভিন্ন সময়ে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে বঙ্গবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের নিয়েও ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরে বঙ্গবাজারের নিরাপত্তা বিষয়ে করণীয় নিয়ে সভা করা হয়। এ সময় তাদের করণীয় বিষয়ে বিভিন্ন রকম পরামর্শ প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, বঙ্গবাজার মার্কেটের আগুন নির্বাপণের সময় বিপুল জনতার ভিড়, আগুন নেভানোতে বাধা প্রদান, ভাঙচুর,
দূর থেকে পানি সংগ্রহ করা, মার্কেটের বিভিন্ন পাশ তালাবদ্ধ থাকা, বঙ্গবাজারের পশ্চিম পাশের রাস্তায় বিপুল পরিমাণ মালামাল রাখায় গাড়ি-পাম্প স্বাভাবিকভাবে মুভমেন্ট করতে না পারা এবং ওই মালামালের মাধ্যমে আগুন বরিশাল প্লাজায় ছড়িয়ে পড়া ইত্যাদি অগ্নিনির্বাপণ কাজকে বিলম্বিত ও বাধাগ্রস্ত করে। খবর : ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেল।