বিজয় ধর, রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি : পাহাড়ে আজ পালিত হচ্ছে বৈসাবি উৎসবের মূল দিন—বিজু। আর এই দিনে পাহাড়িদের ঘরে ঘরে তৈরি হয় এক বিশেষ ঐতিহ্যবাহী খাবার—‘পাঁচন’।
বৈসাবিতে পাহাড়িদের ঘরে ঘরে রান্না করা হয় এই ব্যতিক্রমী খাদ্য। প্রায় ৪০ রকমের সবজি দিয়ে তৈরি এই খাবারকে চাকমারা বলেন ‘পাজঁন’ এবং ত্রিপুরারা বলেন ‘মৈদালজাক’। তবে কখনো কখনো এই পাঁচনে সবজির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০৫-এও!
এই পাঁচনকে ঘিরে রয়েছে নানা বিশ্বাস। পাহাড়িদের ধারণা, পাঁচন খেলে শরীর থেকে রোগ-ব্যাধি দূর হয়। এমনকি, একদিনে যদি সাতটি পরিবারের পাঁচন খাওয়া যায়, তবে সকল রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলেও মনে করেন তারা।
ত্রিপুরা তরুণী খেয়াই ত্রিপুরা পূজা বলেন,
“বৈসাবিতে অতিথিদের আপ্যায়ন করতে আমরা নিজ হাতে মৈদালজাক তৈরি করি। এটা শুধু খাবার নয়, আমাদের ঐতিহ্য।” তিনি বলেন, এ পাচন রান্নায় বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আমাদের মধ্যে প্রথা আছে এই পাচন যদি ৫-৭ বাড়ি ঘুরে খেতে পারি তাহলে রোগ- ব্যাধি থেকে মুক্তি পাবো।
রাঙামাটি ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশন এর সভাপতি বিদ্যুৎ শংকর ত্রিপুরা বলেন,
“এই উৎসব শুধু খাবারের নয়, বরং সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির মিলনমেলা। বিজুর দিনে পাহাড়ি-বাঙালি সবাই একত্র হয়, যা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।”
এই উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ের প্রতিটি ঘরে ঘরে তৈরি হচ্ছে পাঁচন, অতিথিদের আপ্যায়ন আর আত্মীয়-পরিজনের মধ্যে যাওয়া-আসার মাধ্যমে বৈসাবি উৎসব পেয়েছে তার চিরায়ত রূপ।