লেখক: সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেইন : বিশ্বায়নের ধারাবাহিকতায় প্রতিটি প্রজন্মই প্রযুক্তি ও জীবনধারার পরিবর্তনের সঙ্গে নতুনভাবে গড়ে ওঠে। আধুনিক পৃথিবীর অন্যতম আলোচিত একটি প্রজন্ম হলো জেনারেশন জেড বা সংক্ষেপে জেন-জি।
জেনারেশন জেড কারা?
প্রায় দুই দশক ধরে একটি প্রজন্ম গঠিত হয় এবং তা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী প্রজন্মের তুলনায় স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বহন করে। গবেষকদের মতে, ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরাই জেনারেশন জেডের অংশ। অর্থাৎ বর্তমানে ১২ থেকে ২৭ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীরাই এই প্রজন্মের প্রতিনিধি।
প্রজন্মের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
প্রতিটি প্রজন্মের নামকরণ ও সময়সীমা নির্দিষ্ট কোনো সরকারি সংস্থা বা কমিটি দ্বারা নির্ধারিত হয় না। বরং সময়ের পরিবর্তন, প্রযুক্তির বিকাশ, সামাজিক মূল্যবোধ এবং ঐতিহাসিক ঘটনা অনুযায়ী এদের নামকরণ হয়। নিচে বিভিন্ন প্রজন্মের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি দেওয়া হলো—
জেনারেশন জেডের বৈশিষ্ট্য
১. প্রযুক্তির সঙ্গে বেড়ে ওঠা – এরা জন্ম থেকেই ডিজিটাল যুগের বাসিন্দা। ইউটিউব, গুগল, সোশ্যাল মিডিয়া ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) ব্যবহার এদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
২. বৈচিত্র্যময় চিন্তাধারা – এই প্রজন্ম আগের তুলনায় অনেক বেশি উন্মুক্ত, উদ্ভাবনী চিন্তায় আগ্রহী এবং সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার।
৩. গ্লোবাল কানেকশন – প্রযুক্তির কারণে এরা সারাবিশ্বের মানুষের সঙ্গে সহজেই সংযুক্ত হতে পারে, যা তাদের চিন্তাভাবনাকে আরও বিস্তৃত করেছে।
৪. স্বাধীনতা ও উদ্ভাবনের প্রবণতা – চাকরির চেয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রতি আগ্রহী এই প্রজন্ম। ফ্রিল্যান্সিং, স্টার্টআপ, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদির মাধ্যমে অনেকেই স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে।
৫. মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা – মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে এরা অনেক বেশি সচেতন এবং এ নিয়ে কথা বলতেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
ভবিষ্যতে জেন-জির ভূমিকা:
বিশ্বায়ন ও প্রযুক্তির বিস্তারের কারণে জেন-জি প্রজন্ম আগের তুলনায় আরও দ্রুত পরিবর্তনশীল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিক্স, বায়োটেকনোলজি, ব্লকচেইন ইত্যাদির মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থান ও বিশ্বব্যবস্থায় এই প্রজন্ম নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
তবে প্রযুক্তির প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা, সামাজিক বন্ধন দুর্বল হওয়া, বাস্তব জীবনে যোগাযোগ কমে যাওয়া ইত্যাদি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে, যা তাদের সামনের দিনে মোকাবিলা করতে হবে।
লেখকের শেষ কথা : পৃথিবীর ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা ইসলামের বিপ্লব যখন শুরু হয় তখন বিশ্ব মানবতার মহান শিক্ষক মোহাম্মদ সঃ এর পাশে দাড়িয়ে ছিল সেই সময়ের তরুণ সমাজ তরুণ প্রজন্ম। তাঁরা বুকের তাজা প্রাণ দিয়ে ইসলামের বিজয় অর্জন করেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এই তরুণ সমাজ এ বিপ্লবী ছাত্র জনতা তাঁদের তাজা প্রাণ বিলিয়ে দিয়ে স্বাধীনতার লাল সূর্য এনে দিয়েছে। ২৪ শের গণঅভ্যুত্থান বিপ্লবের দিকে তাকালে দেখা যায় সেই “জেন জি “প্রজন্ম এই সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা সোনার বাংলাকে নতুন করে স্বাধীন করেছে। এনে দিয়েছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন, বাক স্বাধীনতা, স্বৈরাচার মুক্ত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
জেনারেশন জেন জি একটি পরিবর্তনশীল, উদ্ভাবনী ও প্রযুক্তিনির্ভর প্রজন্ম। এরা বর্তমান বিশ্বে পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতের বিশ্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের প্রভাব আরও সুদূরপ্রসারী হবে, যা নতুন এক পৃথিবীর সূচনা করবে। বাংলাদেশের বুকে ইসলামের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে ইনশাআল্লাহ।
লেখক : সম্পাদক
মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেইন, ইউকে