ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,”আন্দোলনকারী শক্তিগুলোর ভিন্ন ভিন্ন মত নিয়ে দেশজুড়ে সংঘাতের কোনো আশংকা নেই। জনসাধারণ যার এজেন্ডা গ্রহণ করবে তারাই ভোটে নির্বাচিত হবে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রে ভিন্নমত থাকবে, এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের এজেন্ডা নিয়ে জনসাধারণের কাছে যাবে, জনসাধারণ যারটা গ্রহণ করবে তারাই নির্বাচিত হবে।” মির্জা ফখরুল বলেন, ডানপন্থা ও কর্তৃত্ববাদের ক্রম উত্থানের প্রেক্ষিতে এখন দুনিয়া জুড়েই গণতন্ত্র হুমকির সম্মুখিন। বিএনপির সাথে জাতিসংঘ মহাসচিবের ঢাকার বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব নিজেই তা উল্লেখ করেছেন।তিনি বলেন, গণতন্ত্রে ভিন্নমত থাকবে, এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। গণতন্ত্রে নানা সমস্যা থাকলেও এটাই এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সেরা মতবাদ, তই গণতন্ত্র রক্ষা এখন একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে আমাদের সামনে এসেছে। বহুদলীয় গণতন্ত্র বা বহুত্ববাদকে এখন ছড়িয়ে দিতে হবে।বুধবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও কালিবাড়িস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপ প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
সোশ্যাল মিডিয়া একটা অপতথ্য ও মিথ্যা প্রচারের কারখানা, আমি সোশ্যাল মিডিয়া দেখিনা। একই সাথে আগষ্ট অভ্যুত্থানের পর থেকে ভারতীয় মিডিয়ায় সম্প্রতি চট্টগ্রাম দখলের হুমকিসহ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেসব অপপ্রচার চলছে তাকে ‘পাগলের প্রলাপ’ বলে আখ্যায়িত করেন তিনি ।” তিনি বলেন, আগষ্ট আন্দোলনের পরপরই সংখ্যালঘুদের উপর কিছু কিছু অন্যায় হলেও তারপর থেকে এখন অব্দি আর কোনো নির্যাতন তো চলছে না!অথচ ভারতীয় মিডিয়ার হিংসাত্মক প্রচারণা দেখলে মনে হয় যেন, প্রতিদিন এমন ঘটনা ঘটছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি কখনো নির্বাচন নয় সংষ্কার বা আগে নির্বাচন পরে সংষ্কার এসব কথা বলেনি। এটা বিএনপিকে টার্গেট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার অথবা বিএনপির কর্মসূচি বুঝতে বা বোঝাতে না পারার সমস্যা। বিএনপি’র ৩১ দফায় বর্তমানে উচ্চারিত সংষ্কারের সবগুলো বিষয়ই রয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি সবসময়ই ধ্বংস হয়ে যাওয়া নির্বাচন ব্যবস্থার সংষ্কার করে নির্বাচন চেয়েছে। বিগত সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলাকালীন আমরা ৬ মাসের কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়েছি। বিএনপি যা চেয়েছিল সেটাই তো এখন আসছে, তাহলে সমস্যা কোথায়।”
ঠাকুরগাঁওসহ দেশজুড়ে গ্রেফতার বাণিজ্য এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ঘাটতির কথা স্বীকার করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আরও বলেন, হাসিনার আমলের পুলিশি নিপীড়ন ব্যবস্থার ফলে বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের মনোবলে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। দেশজুড়েই আমরা আইন-শৃঙ্খলার অবনতির খবর আমরা পাচ্ছি। বিএনপির যেসব নেতা-কর্মী-সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া এবং অন্যায় করার সেসবের বিরুদ্ধে আমরা কিছু অভিযুক্ত কমিটি ভেঙ্গে দেয়া, বহিষ্কারসহ নানা দলীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগের সঠিক পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে যেসব ঘাটতি রয়েছে, সেগুলোর নির্বাচনের আগেই সংষ্কারের প্রস্তাব আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দিয়েছি, প্রয়োজনে আরও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের ব্যাপারে বলবো।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক পয়গাম আলী, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্ল্যাহ মাসুদ, পৌর বিএনপি’র সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরীফ, সাধারণ সম্পাদক তারিখ আদনানসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়ার সাংবাদিকরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সিংক- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব, বিএনপি।
জাকির মোস্তাফিজ মিলু