বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগের রাতে ভোট হয়েছে, নিজেদের পছন্দ মতো লোককে পার্লামেন্টে বসানো হয়েছে। তারপরও আপনারা যদি এতই উন্নয়ন করে থাকেন আর গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে থাকেন, তাহলে এত ভয় কেন?।
তিনি বলেন, তারা কথায় কথায় মায়ের বুক খালি করে দেয়, সন্তানের কাছ থেকে পিতাকে গুম করে দেয়। প্রতিবছর তারা সবকিছুর দাম তিন-চারবার করে বাড়ায়। আর বিদ্যুতের দাম তো বাড়তেই আছে। একদিকে তারা দুর্নীতি করে আরেক দিকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়। আমাদের শত শত নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। আমাদের গুম হওয়া নেতাকর্মীদের সন্তানরা তাকিয়ে থাকে, কখন তাদের বাবা ফিরে আসবে। শুধু আমাদেরই নয়, দেশের গণমাধ্যমেরও গলা চেপে ধরা হয়েছে।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার পাঁচরুখীতে উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আপনারা লিখতে পারবেন না। যদি লিখেন জেলে নেওয়া হবে, চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়া হবে। সংবাদকর্মীরা কীভাবে চলবে সেটা নিয়ে এখন তারা আইন তৈরি করছে। এটা তাদের পুরোনো অভ্যাস। ৭৫ সালে একইভাবে আওয়ামী লীগ তাদের এ হত্যা গুম বন্ধ যখন কোনোভাবেই আড়াল করতে পারছিল না, তখন তারা বাকশাল করেছিল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ আইন আদালত ধ্বংস হয়ে গেছে। এ আদালতের মাধ্যমেই আজ বেগম জিয়াকে জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় পরে তার নাম যুক্ত করা হয়েছে। উচ্চ আদালতে তিনি আবেদন করেছিলেন- মামলা খারিজের জন্য। মামলাটাকে তারা খারিজ করেনি। জোবায়দা রহমানকেও তারা দেশে আসতে দিতে চায় না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ৬শর অধিক নেতাকে গুম করে দিয়েছে। আজ ইলিয়াস আলীর মেয়ে-ছেলে দরজার দিকে তাকিয়ে আছে কবে তাদের বাবা ফিরে আসবে। হাজার হাজার মানুষকে তারা হত্যা করেছে বিনা বিচারে। এভাবে এদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
কিছুক্ষণ আগে শুনলাম যারা এখানে আসছিল তাদের ওপরও হামলা হয়েছে। এতই যদি উন্নয়ন করে থাকেন, তাহলে ভয় পান কেন। একটা দল সম্মেলন করবে, সেটাকে ভাঙেন কেন। একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে দেখেন। এ দেশের মানুষ আপনাদের বিতাড়িত করে ছাড়বে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সরকারকে পরিষ্কারভাবে বলেছি পদত্যাগ করুন এবং নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। একটা নতুন জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। সে সরকার সকলকে নিয়ে কাজ করবে। আসুন আমরা সকলে একসঙ্গে এগিয়ে যাই।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইউসুফ আলীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু। বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এটিএম আব্দুল বারী, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনিরুল ইসলাম রবি, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাসুকুল ইসলাম রাজীব প্রমুখ।