সাইফুল ইসলাম তুহিন স্টাফ রিপোর্টার : আফাজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (ম্যাকপার্শান ক্যাম্পাস)-এর বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে (৩০শে মার্চ২০২৫) আয়োজিত ইফতার পার্টি এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। বিদ্যালয়ের সকল সম্মানিত শিক্ষকগণের উপস্থিতি পুরো আয়োজনকে আরও স্মরণীয় করে তোলে। উষ্ণ পরিবেশ, হৃদ্যতা ও শিক্ষণীয় আলোচনায় ভরপুর এই আয়োজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করেছে।
সহকারী প্রধান শিক্ষক ফুল্লিং দাস শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “একজন শিক্ষার্থী কেবল পরীক্ষার ফলাফলের জন্য নয়, বরং প্রকৃত জ্ঞান অর্জন এবং নৈতিক শিক্ষা গ্রহণের জন্য বিদ্যালয়ে আসে। শিক্ষা মানুষের জীবনের সেরা সম্পদ এবং তা ব্যক্তিত্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।” তিনি আরও বলেন, “শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তক নয়, বাস্তব জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষাকে কাজে লাগাতে হবে।”
ইংরেজি শিক্ষক আব্দুল আউয়াল বলেন, “ইসলাম জ্ঞান অর্জনকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়েছে। হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরজ’। তাই আমাদের ধর্মীয় ও পার্থিব উভয় জ্ঞানের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।” তিনি আরও বলেন, “শিক্ষা কেবল চাকরি পাওয়ার জন্য নয়, বরং ন্যায়বিচার, নৈতিকতা ও আত্মশুদ্ধির জন্যও প্রয়োজন।”
মাপু মেম্বার বলেন, “একটি জাতির উন্নতি নির্ভর করে তার শিক্ষিত জনগণের উপর। শিক্ষা শুধু ব্যক্তিগত উন্নতির জন্য নয়, এটি সমাজ ও দেশের অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য। আমাদের সকলের উচিত শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়া এবং নতুন প্রজন্মকে জ্ঞানের পথে পরিচালিত করা।” তিনি আরও বলেন, “নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি কেবল জ্ঞানীই নয়, বরং একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হয়ে উঠতে পারে।
মির্জা আরিফ শিক্ষার্থীদের উদ্যেশে তিনি বলেন, “সফলতা কখনো সহজে আসে না। পরিশ্রম, অধ্যবসায় ও ধৈর্যের মাধ্যমে মানুষ তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। তোমাদের স্বপ্ন দেখা এবং তা বাস্তবায়নের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “আত্মবিশ্বাস, সময়ের সঠিক ব্যবহার এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে যেকোনো শিক্ষার্থী নিজের জীবনকে সাফল্যমণ্ডিত করতে পারে।”
মাওলানা মুজিবর রহমান বলেন, “রমজান কেবল সিয়াম সাধনার মাস নয়, এটি আত্মশুদ্ধি ও ত্যাগের শিক্ষাও দেয়। আমাদের উচিত এই মাসে বেশি বেশি ইবাদত করা এবং আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে প্রকৃত মুসলমান হয়ে ওঠা।” তিনি আরও বলেন, “রমজান আত্মসংযমের মাস, যেখানে আমাদের ধৈর্য, সহনশীলতা ও মানবিক গুণাবলির চর্চা করতে হবে।”
তার বক্তব্য শেষে এক হৃদয়ছোঁয়া মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। মোনাজাতে দেশ, জাতি এবং সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করা হয়।
এই ইফতার পার্টি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছিল না; এটি ছিল শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষনীয় ও অনুপ্রেরণামূলক একটি আয়োজন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একত্রিত হওয়ার এই মুহূর্ত তাদের মাঝে পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে। ভবিষ্যতে এমন মহতী আয়োজন আরও বেশি হবে বলে আয়োজকরা প্রত্যাশা করেন।