বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে ক্ষোভ ঝারলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম ম্যাচ হারের পর তাদের নিয়ে অনেক সমালোচনা হচ্ছিল। সাধারণ মানুষ, গণমাধ্যম এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) প্রধান নাজমুল হাসান কড়া সমালোচনা করেছেন ক্রিকেটারদের। এসব মোটেও পছন্দ হয়নি অধিনায়কের।
পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় জয়ের পর সংবাদ সম্মেলন এসে মাহমুদউল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিমর্ষ মাহমুদউল্লাহর কন্ঠ বারবার ভারী হয়ে যাচ্ছিল। অগোছালো হচ্ছিল শব্দগুলো। কথা ঠিকমতো বলতে পারছিলেন না। তবুও দলের জন্য আরো একবার নিজেকে শান্ত করে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন।
মাহমুদউল্লাহ বলেছেন, ‘সমালোচনা আমাদের স্পর্শ করে। আমরাও মানুষ। আমাদের পরিবার আছে। আমাদের বাবা-মা রা’ও বসে থাকেন টিভির সামনে। আমাদের বাচ্চারাও খেলা দেখে। তারাও মন খারাপ করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তো এখন মানুষের হাতের নাগালে। সবার মোবাইলে আছে। সমালোচনা তো হবেই। আমরাও আশা করি সমালোচনা হোক। আমরা খারাপ খেলেছি সমালোচনা হবেই। কিন্তু সমালোচনার মাধ্যমে কেউ কাউকে ছোট করে ফেলে সেটা কিন্তু খারাপ লাগে।’
‘অনেক প্রশ্ন এসেছে। আমাদের ব্যাটিংয়ের স্ট্রাইক রেট। আমাদের তিন সিনিয়র ক্রিকেটারের স্ট্রাইক রেট নিয়ে। আমরা তো চেষ্টা করেছি। চেষ্টার বাইরে তো আমাদের কাছে কিছু নেই। এরকম না যে আমরা চেষ্টা করিনি। আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। কিন্তু ফল আমাদের পক্ষে আনতে পারিনি। সমালোচনা হবেই। এটা কাম্য। কিন্তু সুস্থ সমালোচনা হলে সবার জন্য ভালো। আমরাও অনুভব করি। বাংলাদেশের জার্সিটা যখন আমরা গায়ে দেই তখন আমাদেরও সম্মান অনুভব হয়। আমরা দেশের জন্য কতটুকু করি।’
‘সবারই ত্যাগ থাকে। কারো ব্যথা থাকে। কারো অনেক ইনজুরি থাকে। ওগুলো নিয়ে আমরা খেলি। দিনের পর দিন আমরা খেলি। পেছনের গল্পগুলো অনেকেই জানে না। এজন্য কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন করা ঠিক না। আশা করি, এখন কিছুটা স্বস্তি পাবো। সবচেয়ে বড় কথা, দলের ভেতরে যে উদ্রীবতা ছিল ওইটা নেই। এজন্য খেলোয়াড় এবং প্রত্যেক টিম ম্যানেজমেন্টকে কৃতিত্ব দেওয়া উচিত। শুধু আমরাই নই। আমাদের স্টাফ, সোহেল ভাই (ম্যাসাজম্যান), রমজান (থ্রোয়ার) প্রত্যেকের ক্রেডিট দিতে হবে। আশা করছি ভালো কিছু হবে সামনে।’
সাধারণ মানুষ সমালোচনা ক্রিকেটারা খুব একটা গায়ে মাখেন না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট, কমেন্ট কিংবা মিমি নিয়েও তারা অতটা উৎগ্রীব নন। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষ পর্যায় থেকে যখন সমালোচনা হয় এবং গণমাধ্যমে সেসব নিয়ে আলোচনা তখন ক্রিকেটাররা হতাশ হন।
স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ হারের পরদিন গণমাধ্যমে ক্রিকেটারদের প্রত্যেককে নিয়ে সমালোচনা করেন নাজমুল হাসান। হারের জন্য তিন সিনিয়রের ওপর দায় চাপান। দল নির্বাচন, বোলিং, ব্যাটিং সবকিছু নিয়েই সমালোচনা করেন। এসব নিয়ে দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে ক্ষোভ জন্মেছে। ক্রিকেটারদের আপত্তি, বিসিবি কর্মকর্তাদের নেতিবাচক কথা নিয়ে।
ওমানের বিপক্ষে জয়ের পর ম্যাচ সেরা হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন সাকিব আল হাসান। সেদিন স্বাভাবিক প্রশ্নের উত্তরগুলোও সাকিব ঠিকমতো দেননি। আজ মাহমুদউল্লাহও ছিলেন বিমর্ষ। রাগ, ক্ষোভ, কষ্ট নিয়ে প্রশ্ন করতেই মাহমুদউল্লাহ কথার ঝাঁপি খুলে দেন, ‘শক্ত হওয়াটাই তো স্বাভাবিক। বিগত কয়েক দিনে…ঠিক আছে আমরাও মানুষ। আমরাও ভুল করি। এ কারণে একদম ছোট করে ফেলা ঠিক না। এটা আমাদের দেশ। আমরা সবাই এক দেশের জন্য খেলি। সবারই প্রত্যাশা থাকে এবং আমাদের যে বেশি অনুভূতি আর কারো বেশি না আমি মনে করি। সমালোচনা হবেই খারাপ খেললে। কিন্তু একেবারে ছোট করে ফেলা ঠিক না। সব সেক্টরেই এমন হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, গণমাধ্যম ও বাইরে থেকেও।’