স ম জিয়াউর রহমান, চট্টগ্রাম থেকে : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর ও প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান চট্টগ্রাম দরদী নেতা ছিলেন, রাষ্ট্রের অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, সামাজিক শ্রেষ্ঠত্ব ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র বজায় রাখতে সবসময় চেষ্টা করতেন। তিনি বিএনপিকে দক্ষ হাতে লক্ষ লক্ষ মানুষের সংগঠনে পরিনত করেন। তাঁর তৈরি সাংগঠনিক স্ট্রাকচারের উপরেই বর্তমান প্রজন্ম রাজনীতি করছে।
গত ২০ মার্চ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আমরা চাটগাঁবাসী আয়োজিত ‘চট্টগ্রামের উন্নয়ন অগ্রগতিতে আব্দুল্লাহ আল নোমানের অবদান’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
আমরা চাটগাঁবাসীর নির্বাহী প্রধান এবিএম ইমরানের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব ও দৈনিক আমার দেশ’র আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব নোমান উল্লাহ বাহার’র সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর, প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন হেফাজতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুফতি হারুন ইজহার চৌধুরী, শিক্ষা উদ্যোক্তা সাঈদ আল নোমান তুর্য্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরী, নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মুহাম্মাদ শাহনেওয়াজ, জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক জোবাইরুল হাসান আরিফ।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন শ্রমিক দল চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক ফরহাদ উদ্দীন সোহাগ, আমরা চাটগাঁবাসী’র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ওয়াসি উদ্দীন আনসারী, এডভোকেট কানিজ কাউসার রিমা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, ডা. আবুল কালাম আজাদ, ইউসুফ বাহার চৌধুরী, লায়ন সাজ্জাদ উদ্দিন, অতিরিক্ত জিপি মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন, ডা. এটিএম শহিদ উল্লাহ, লায়ন এস.এম ইউসুফ, হাজী নুরুল হক, মোহাম্মদ আরিফ, যুব অধিকার পরিষদের সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহিদুল ইসলাম শাহেদ, আরটিআর তারেক, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য ইমন মোহাম্মদ, নুরুল আফসার চৌধুরী, আলহাজ্ব জসিম উদ্দীন, সাংবাদিক তানভির, এ. কে মোহাম্মদ ইফতেখার হাসান, মোহাম্মদ মিয়া, আব্দুল মোত্তালিব, সোহেল উদ্দীন, ফাতেমা ফেরদৌসী, মাহবুবা ইলা তোহফা, আব্দুল মন্নান হৃদয়, ফারুক হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার এন আমিন প্রমুখ।
সেমিনারে সাঈদ আল নোমান তুর্য্য বলেন, আমার বাবা আমাদেরকে ছোটবেলা থেকেই চট্টগ্রামবান্ধব হতে শিখিয়েছেন। তিনি চট্টগ্রামের ভাষায় মনভরে কথা বলতে ভালোবাসতেন। তিনি চট্টগ্রামকে হৃদয়ে ধারণ করতেন। চট্টগ্রামকে পূর্নাঙ্গ বানিজ্যিক রাজধানী হিসেবে বাস্তবায়ন করতে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারী বিশ্ববিদ্যালয়, কর্ণফুলী সেতুসহ অনেক অবকাঠামো উন্নয়নে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য্য।
মুফতি হারুন ইজহার চৌধুরী বলেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান সবার সাথে সুন্দর সুসম্পর্ক রাখতেন। কারো সাথে ক্লেশে যেতে আমরা দেখিনি। চট্টগ্রামে সর্বজন গ্রহনযোগ্য রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তাঁর সুনাম আছে। আল্লাহ তাঁর অবদান কবুল করুন।
জাহিদুল করিম কচি বলেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান চট্টগ্রামকে অসম্ভব ভালোবাসতেন। চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়নে আমরা যারা কাজ করতাম তাদেরকে তাঁর সুনিপুণ নির্দেশনা ও অভিভাবক সুলভ আদর আপ্যায়নে আমরা আপ্লুত হতাম। তিনি কর্মীবান্ধব নেতা ছিলেন। সবসময় তৃণমূল নেতাকর্মীদের খোঁজ খবর নিতেন। তিনি চট্টগ্রামে ঐক্যের প্রতীক, তাঁর আদর্শ অনুসরণ করলে দলে কোন বিভাজন থাকবেনা।
সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে এবিএম ইমরান বলেন, চট্টগ্রামের সর্বজন গ্রহণযোগ্য জাতীয় নেতারা আমাদের সম্পদ। তাঁদের আদর্শ চর্চার মাধ্যমে কর্ণফুলি সভ্যতা আরও বিকশিত হবে। তাই দলমত নির্বিশেষে চট্টগ্রামের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, আব্দুল্লাহ আল নোমানের বৈশিষ্ট ছিলো তিনি শুনতেন বেশি বলতেন কম। তিনি তৃণমূলের কথা শুনতে চাইতেন বেশি। তারুণ্যের পাল্স ভালো বুঝতেন তাই যত্রতত্র যেনতেন কথা বলে তাদের মন ভাঙ্গতে চাইতেন না। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ আল নোমান চট্টগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা। সব দল—উপদলের নেতারা তাঁর কাছে আনুকূল্য পেত। তিনি সবাইকে সমান চোখে দেখতেন। তাঁকে হারিয়ে চট্টগ্রামে আমরা একজন নির্ভরযোগ্য অভিভাবক হারিয়েছি।