বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: বাংলাদেশে ক্ষমতা পালাবদলের মধ্য দিয়ে বর্তমানে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক নিবিড় হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, এ দুটোর একটাকেও আমি ঠিক মানছি না। আমি মনে করি কোনো এক পর্যায়ে, কোনো এক কারণে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কে একটু টানাপড়েন ছিল।
স্বাভাবিক একটি সম্পর্ক যদি উন্নীত হয়, আমাদের সবার খুশি হওয়া উচিত। আমরা তো সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। পাকিস্তানের সঙ্গে তো এখন আমাদের শত্রুতা করে ফায়দা নেই।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দিল্লি-ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাখ্যায় এমন অভিমত প্রকাশ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তৌহিদ হোসেন বলেন, আপনারা যদি মনে করেন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক একটু টানাপড়েন চলছে, সেটা দ্বিপাক্ষিকভাবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে। তবে আমরা একটি কথা মনে করি, সম্পর্ক মানুষকেন্দ্রিক হতে হবে। আসলে এমন হতে হবে যেন মানুষও মনে করে যে, সম্পর্কটা ভালো।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সোনালি অধ্যায়ের কথা বলা হতো। এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় ছিল দুই সরকারের মাঝে। আমরা চাই, সুসম্পর্ক থাকুক জনসাধারণের পর্যায়ে, মানুষ সেটাতে যুক্ত হোক। মানুষ মনে করুক, আসলে খুব ভালো সম্পর্ক। সেটা যে ছিল না এটা স্বীকার করা ভালো। দ্বিপাক্ষিক সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে আমি মনে করি মানুষের মাঝে ক্ষোভ ছিল, সেগুলো প্রশমন করা সম্ভব।
ভারতীয় গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতীয় মিডিয়ায় যেটা হয়েছে, সেটা একেবারে মিথ্যার বেসাতি, বাড়াবাড়ি। বিপ্লব সাধিত হওয়ার পর কিছু বিশৃঙ্খলা থাকে। এটা মেনে নিতে হবে। কিছু বিশৃঙ্খলা ছিল, সেখানে কিছু দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। সেটা নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া যেভাবে লেগে পড়েছিল, বিশ্বমিডিয়ায় যারা নিরপেক্ষ তারা কেউ কিন্তু ভারতীয় লাইনটাকে গ্রহণ করেনি। ভারতীয় মিডিয়া একেভাবে হাইপ সৃষ্টি করেছে। আমার মনে হয়, আমরা সেই স্টেজ পার হয়ে আসছি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিলিতে আছেন কি না বা তিনি অন্য কোথাও চলে গেলে জানতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নে তৌহিদ হোসেন বলেন, তার সঙ্গে তো আমাদের কোনো চ্যানেল নেই।
তিনি ভারতের আশ্রয়ে আছেন। যদি তিনি অন্য কোনো দেশে চলে যান, সেটা তো আপনাদের আমার কাছ থেকে জানতে হবে না। আপনারা নিজেই জানতে পারবেন। আপনারা যেভাবে জানবেন, আমিও হয়তো সেভাবে জানব।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে এবং পরে শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর টানাপড়েন চলছিল বলে অভিমত ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে যেসব ইস্যুতে টানাপড়েন চলছিল, সেগুলো কিন্তু এই সরকারের যে অ্যাজেন্ডা আছে বা ছাত্র-জনতার যে অ্যাজেন্ডা এসেছে, তার সঙ্গে কিন্তু সংগতিপূর্ণ। আমি চূড়ান্তভাবে দ্বন্দ্বের কোনো সুযোগ দেখি না।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিতে যাদের কাজ আছে শুধু তাদের একটি ছোট বহর নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিউইয়র্কে যাবেন বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, একটি ছোট প্রতিনিধি দল যাবে নিউইয়র্কে। আমরা বিশাল প্রতিনিধি দল নিয়ে যাব না। তিনি যত কম সময়ে সেখান থেকে কাজ শেষ করতে পারবেন সেই চেষ্টা করবেন। যাওয়া-আসার সময় মিলিয়ে এক সপ্তাহের বেশি নয়।