বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে দুর্দান্ত জয় তুলে নেয় স্বাগতিক বাংলাদেশ। শুক্রবার (৬ আগস্ট) মিরপুরের শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে টাইগার দলপতি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ফিফটিতে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য অজিদের প্রয়োজন ছিল ১২৮ রান। কিন্তু নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ১১৭ রান করতে সক্ষম হয় অস্ট্রেলিয়া। যার ফলে ১০ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়াকে পর পর তিন ম্যাচে হারিয়ে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিল টাইগাররা।
সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অজি পেসার জশ হ্যাজেলউডের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বল থার্ড ম্যান অঞ্চলে মারতে চেয়েছিলেন নাঈম (১)। কিন্তু বল তার ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক ম্যাথু ওয়েডের গ্লাভসে জমা হয়। পরের ওভারে বোলিংয়ে আসেন অ্যাডাম জাম্পা। অজি লেগ স্পিনারের করা প্রথম বলেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন সৌম্য। বাঁহাতি ওপেনার অবশ্য রিভিও নিয়েছিলেন। কিন্তু রিভিও কোনও কাজে লাগেনি। ফলে টানা তৃতীয় ম্যাচে ব্যর্থতার মুখ দেখলেন সৌম্য। মাত্র ২ রান করে আউট হওয়ার আগে তিনি খেলেছেন ১১ বল। টানা দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ার পর সাকিব ও মাহমুদুল্লাহর ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
তবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব ২৬ রান করে আউট হওয়ার পর আবারও বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচের দুই নায়ক আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসান সোহান দুর্ভাগ্যের শিকার হয়ে রানআউট হয়ে যান। তরুণ তুর্কি শামীম আহমেদও ৩ রানের বেশি করতে পারেননি। এমন দিনেও একপ্রান্ত আগলে রেখে বাংলাদেশের ইনিংস টেনে ১২৭ রানে নিয়ে যান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। নিজেদের ইনিংসের শেষ ওভার পর্যন্ত খেলেছেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। মাহমুদউল্লাহর ৫৩ বলে ৪ বাউন্ডারিতে গড়া ৫২ রানের ইনিংসটিই দলকে ঐতিহাসিক সিরিজজয়ের ভিত গড়ে দিয়েছে। তারপর নেতৃত্বেও রেখেছেন বুদ্ধিমত্তার ছাপ। স্বভাবতই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে উঠেছে মাহমুদউল্লাহর। তবে পুরস্কার হাতে নিয়ে সতীর্থদেরই কৃতিত্ব দিলেন তিনি।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মাহমুদউল্লাহ বলেন, আমার মনে হয় ছেলেরা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জ্বলে উঠেছে। আজ রাতে তারা যেভাবে লড়ল, সেটা অবিশ্বাস্য। যখন আমি আর সাকিব ব্যাটিং করছিলাম, আমরা ভাবছিলাম, একজনকে ১৬-১৭ ওভার পর্যন্ত খেলতে হবে। একজন সেট ব্যাটসম্যান থাকতে হবে। নতুন ব্যাটসম্যানদের জন্য এটা কঠিন। তাদের বোলাররা খুব ভালো বল করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বোলাররাও খুব ভালো করেছে। অনেক কাটার ও স্লোয়ার দিয়েছে। মাঠে যাওয়ার পর আমি চাইছিলাম সাকিব দলের সবার সঙ্গে কথা বলুক। সে বলেছিল, যা কিছুই হোক, আমাদের শুরুতে উইকেট নিতে হবে। তাদের ওপর চাপ বাড়াতে হবে।
১৯তম ওভারে মাত্র ১ রান দিয়ে ম্যাচটা ঘুরিয়ে দেন মুস্তাফিজ। কাটার মাস্টারের আলাদা প্রশংসা করে রিয়াদ বলেন, মুস্তাফিজ আবারও দুর্দান্তভাবে দায়িত্ব নিল। মুস্তাফিজের আজ যে স্পেল ছিল, পাঁচ উইকেট পেলে যেমন হয় এর চেয়ে কম কিছু ছিল না। তেমনই একটা স্পেল ছিল এটা। বিশেষ করে ১৯তম ওভারে এসে কেবল একটি রান দেওয়া, পাঁচটা ডট বল করা। অনেক বড় কিছু।
তিনি আরও বলেন, জিম্বাবুয়ে সফরে শেষেই আমরা পরিকল্পনা নিয়েছিলাম টি-টোয়েন্টিতে আমাদের আরও ভালো পারফর্ম করতে হবে। কারণ দল হিসেবে আমরা ভালো কিন্তু র্যাং কিং তা বলছে না। অথচ আমরা মনে করি, বাংলাদেশ দল বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। সেই বিশ্বাস রেখে হৃদয়কে চওড়া করে এ সিরিজ আমরা খেলছি। এতে আমাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার পূর্ণ ব্যবহার হচ্ছে। আমরা জয় লাভ করেছি।