বঙ্গ নিউজ বিডি প্রতিনিধি : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন ছিল ভোটারবিহীন, ১৮ সালে হয় নিশি রাতের নির্বাচন আর ২৪ সালে হয় ডামি নির্বাচন। সুতরাং এমন নির্বাচন আর দেশবাসী দেখতে চায় না। ডামি নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু এদেশের ছাত্র-জনতার মাধ্যমে আল্লাহ তাদের সে অপশাসন থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করেছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, এমনকি শিক্ষাব্যবস্থা সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। মেয়েদের ইজ্জতের কোনো গ্যারান্টি ছিল না। এসব বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ ফুঁসে উঠেছিল। রংপুরের আবু সাঈদের মতো অসংখ্য ছাত্র-জনতার বুকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ এ দেশের মালিক ছিল না। তারা দেশের মালিক থাকলে দেশ ছেড়ে পালাত না। বাড়িওয়ালা বাড়ি ছেড়ে পালায় না। বরং ভাড়াটিয়া খেলাপি হলে পালিয়ে যায়। আওয়ামী লীগের বেলায়ও তাই হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশ থেকে চলে গেলেও দেশকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না। চারদিকে ষড়যন্ত্রের আগুন জ্বলছে।
তিনি বলেন, আমাদের ওপর অবিচার করা হয়েছে। কিন্তু আমরা বলি আওয়ামী লীগের ওপর সুবিচার করা হোক। কেননা সুবিচার করা হলেও তাদের শাস্তি হবে। তাদের বিচার হতে হবে এ জন্য যে, আর কেউ যেন এমন দুর্বৃত্ত না হতে পারে। আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে আমাদের সন্তানরা। তাদের সে মর্যাদা আমাদের রক্ষা করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ভোট কেন্দ্র সভাপতি, সেক্রেটারি পুরুষ ও মহিলা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
ডুমুরিয়া উপজেলা আমীর মাওলানা মুখতার হুসাইন এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম। বক্তৃতা করেন উপজেলা সেক্রেটারি সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি আব্দুর রশিদ ও মাওলানা ফরহাদ আল মাহমুদ, কর্মপরিষদ সদস্য আলমগীর হোসেন, শেখ মোসলেম উদ্দিন, আবুল হোসেন, মাওলানা আব্দুল হালিম, মাওলানা মতিউর রহমান, হাফেজ মঈন উদ্দীন, মাওলানা মোতালেব হুসাইন, মাওলানা মজিবুর রহমান, আবুল বাসার, মাওলানা রুহুল আমীন।
এর আগে সকালে তিনি শহীদ আব্দুল মোতালেব একাডেমি মিলনায়তনে অনুরূপ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন। দুপুরে কাঞ্চনপুরে মরহুম আইয়ুব আলীর কবর জিয়ারত করেন। এ ছাড়া তিনি সামাজিক কাজে অংশ গ্রহণ করেন।
সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, ২৪ এর জনস্রোত এমনি এমনি আসেনি। এজন্য আমাদের রাহবারগণ জীবন দিয়েছেন। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আমরা একটি ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ গড়তে চাই। দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে চাই। এজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। তিনি জামায়াতের দেওয়া ৪১-দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে বলেন, দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে। আমরা দেশবাসী শুধু জামায়াতে ইসলামী নয়; দেশের আপামর জনগণ জাতি ধর্ম দলমত নির্বিশেষে এদেশে যাদের জন্ম হয়েছে; দেশটাকে যারা ভালবাসে, আমরা সবাই মিলে দেশটাকে গড়তে চাই। আমরা ইনসাফভিত্তিক উন্নয়ন উপহার দিতে চাই।