বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোড়া ইসরায়েলের সঙ্গে ইতালির মাখামাখি নতুন কিছু নয়। ইসরায়েলকে অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সহায়তা করা দেশগুলো তালিকায় রয়েছে ইতালি। কিন্তু গত বছর গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর ইতালি তেল আবিবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল।
যদিও চলতির বছরের মার্চে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী পার্লামেন্টে জানান, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রেখেছে ইতালি। এমন খবর সামনে আসার পর হইচই পড়ে গিয়েছিল।
এবার ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ইসরায়েলকে সতর্ক করেছেন। শনিবার জি-সেভেন সামিটের শেষ দিন এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আয়োজক দেশের প্রধানমন্ত্রী মেলোনি এদিন ইসরায়েলের প্রতি নিজের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তার ভাষায়, গেল বছরের অক্টোবরের শুরুতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনের যোদ্ধাদের হামলা ইসরায়েলকে যুদ্ধে টেনে নিয়েছে।
মুখে ফিলিস্তিনিদের জন্য শান্তির কথা বললেও মেলোনি ভাষায়, একটি ফাঁদে পা দিয়েছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের এই ফাঁদ কাজে দিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী। আর ইতালি যে ইসরায়েলের হাত ছাড়বে না সে কথাও স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন কট্টরবাদী মেলোনি। জি-সেভেনের নেতারা গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানায়নি কেন প্রশ্নের জবাবে তেল আবিবের প্রতি রোমের সমর্থন ব্যক্ত করেন তিনি।
ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বেচে লাখ লাখ টাকা আয় হয় ইতালির। পরিসংখ্যান সংস্থা আইস্ট্যাট জানিয়েছে, গেল বছরের শেষ তিন মাসে ইসরায়েলের কাছে ২৩ লাখ ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে রোম। কেবল ২০২৩ সালের ডিসেম্বরেই ইসরায়েলের কাছে ১৩ লাখ ইউরো সমমূল্যের অস্ত্র বিক্রি করেছে মেলোনির সরকার। এটা ২০২২ সালের একই মাসে ইসরায়েলের কাছে বিক্রি করা অস্ত্রের চেয়ে তিনগুণ বেশি।
যুদ্ধের নামে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের হত্যার উৎসব করছে ইসরায়েল। তাদের যুক্তি, নিজেদের আত্মরক্ষায় এমন পথ বেছে নিয়েছে তেল আবিব। তবে ইসরায়েলের তথাকথিত আত্মরক্ষার এই লড়াইয়ের বলি হয়েছে, অন্ততপক্ষে ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। যদিও রোববার ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ‘কৌশলগত যুদ্ধবিরতি’র ঘোষণা দিয়েছে। তবে এর আগেও বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বার বার তা ভঙ্গ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
দীর্ঘ আট মাস ধরে চারদিক থেকে ঘিরে রেখে গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। সমালোচনা দূরে থাক, বেশ কয়েকজন পশ্চিমা নেতা উল্টো ইসরায়েলের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন বার বার। যদিও ধীরে ধীরে জনগণের চাপে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের জনমত বদলেছে। খোদ ইতালিতেও ফিলিস্তিনের সমর্থনে মিছিল হয়েছে। উঠানো হয়েছে ফিলিস্তিনের পতাকা। কিন্তু তারপরও বিশ্বমঞ্চে দাঁড়িয়ে ইসরায়েলের পক্ষেই কথা বললেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী।