বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : প্রিয়জনকে হারানোর ব্যথা মানুষ সহজে ভুলতে পারে না। স্বাভাবিক হতে সময় লাগে। প্রিয়জন হারানো ব্যক্তিকে সমবেদনা জানানো ইসলামের শিক্ষা।
মৃতের স্বজনদের ধৈর্য্য ধারণ, তাকদিরের ওপর বিশ্বাস, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া ও নেক আমলের সওয়াব পাঠানোর কথা বলা উচিত।
এছাড়াও তাদের এমন কথা বলা উচিত যেন তারা শান্ত্বনা পায়।
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো বিপদের সময় তার মুসলিম ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা প্রকাশ করে তাকে আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন সবুজ রঙের পোশাক পরাবেন; যা অন্যান্য লোকে দেখে ঈর্ষা করবে।’ -(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ ৪/ ১৬৪)
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, সন্তানহারা মাকে যে সান্ত্বনা দেয় জান্নাতে তাকে বিশেষ পোশাক পরানো হবে। (তিরমিজি, হাদিস : ১০৭৬)
হাদিসে আরও এসেছে, যে ব্যক্তি কোনো বিপদে পড়ে অতঃপর যখন তা স্মরণ হয় তখন ‘ইন্নালিল্লাহ…’ বলে, আল্লাহ তাকে তেমন নেকি দেবেন যেমন নেকি দিয়েছিলেন বিপদগ্রস্ত হওয়ার দিন। (শুয়াবুল ঈমান, হাদিস : ৯৬৯৫)
সমবেদনা জানানোর সময় শোকাহত ব্যক্তিদেরকে জানানো উচিত যে, কান্নাকাটি করলে কবরে তাদের আত্মীয়ের আজাব হবে। তবে নিরব কান্না ও চোখ অশ্রুসজল করে প্রিয়জন হারানোর ব্যথা প্রকাশ করা যাবে।
এক ব্যক্তির ছেলে মারা গেলে তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার সময় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘হে অমুক! তোমার নিকট কোনটা অধিক পছন্দনীয় ছিল? তোমার ছেলেকে নিয়ে দুনিয়াতে সুখ উপভোগ করা, নাকি কাল যখন তুমি জান্নাতে যেকোনও দরজায় যাবে, তখন সে তোমার আগে পৌঁছে তোমার জন্য দরজা খুলে দেবে সেটা?’
লোকটি বলল, হে আল্লাহর নবী! বরং সে আমার আগে জান্নাতে গিয়ে আমার জন্য তার দরজা খুলবে এটাই আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘অতএব তাই তুমি পাবে। (ধৈর্য ধর)।’ -(নাসাঈ, ২০৮)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি যার কোনো প্রিয়জনকে উঠিয়ে নিই আর সে ধৈর্য ধারণ করে এবং নেকির আশা রাখে আমি তাকে জান্নাত দিয়েই সন্তুষ্ট হব। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪০১)
হজরত ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘আপনজনের কান্নাকাটির কারণে মৃত ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হয়।’ তবে আপনজনের মৃত্যুতে অনিচ্ছায় চোখের পানি গড়িয়ে পড়লে কোনো অসুবিধা নেই। এর অনুমতি আছে।
সমবেদনা জানানোর সময় শোকাহত ব্যক্তিদেরকে জানানো উচিত যে, কান্নাকাটি করলে কবরে তাদের আত্মীয়ের আজাব হবে। তবে নিরব কান্না ও চোখ অশ্রুসজল করে প্রিয়জন হারানোর ব্যথা প্রকাশ করা যাবে।
হজরত ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘আপনজনের কান্নাকাটির কারণে মৃত ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হয়।’ তবে আপনজনের মৃত্যুতে অনিচ্ছায় চোখের পানি গড়িয়ে পড়লে কোনো অসুবিধা নেই। এর অনুমতি আছে।
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ছেলে ইবরাহিমের (রা.) মৃত্যুর পর তিনি তাঁর নিষ্প্রাণ দেহ কোলে নিয়ে পিতৃস্নেহে কেঁদে ওঠেন। তখন সাহাবি হজরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) নবী কারিম (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কাঁদছেন? আপনি তো কাঁদতে নিষেধ করেছেন? উত্তরে তিনি বললেন, ‘না, অনিচ্ছাকৃত স্বাভাবিক কান্নাকে আমি নিষেধ করিনি। বরং দুই ধরনের কান্নাকে আমি নিষেধ করেছি এক. সৃষ্টিকর্তার প্রতি অভিযোগ করে কান্না করা; দুই. বিলাপ করে কান্না করা।
মূলত চিত্কার করে, ইনিয়ে-বিনিয়ে, বুক চাপড়ে কাঁদা, মাতম করা এবং জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলা ইসলামের পদ্ধতি নয়। এগুলো জাহিলি যুগের কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি। -(মুসলিম, ১৭ মিশকাত, ২৭)
হজরত আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, যে শোকে গালে চপেটাঘাত করে, জামার অংশবিশেষ ছিঁড়ে ফেলে এবং জাহিলি যুগের মতো চিত্কার করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। (বুখারি, হাদিস : ১২৩৫; মুসলিম, হাদিস : ২৯৬)।