বছরের এ একটি দিনই ধনী-গরিব সবার গায়ে শোভা পায় নতুন জামা। যে যার মতো আয়োজন করেন ভালো খাবার। কর্মস্থল ছেড়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরেন সব শ্রেণির কর্মজীবী মানুষ। তবে এ সময়েও চার দেয়ালের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই কারাবন্দিদের। তাই নিয়মের মধ্যে থেকেই ঈদে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ। পুরুষ, নারী ও শিশুদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে নতুন কাপড়।
কারা সূত্রে জানা যায়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও হাজতি মিলে শনিবার কারাগারে বন্দির সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৩৮০ জন। ঈদে এ বিপুল সংখ্যক বন্দির জন্য উন্নত খাবারের রান্নার আয়োজন করছে কারা কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার দেওয়ান মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জানান, ঈদে বিশেষ রান্নার আয়োজন হবে কারাগারে। কারা অভ্যন্তরে থাকা ৬০টি চুলায় ৩২ জন কয়েদি রান্নার কাজ করবেন। কারাগারের ভেতরেই অনুষ্ঠিত হবে ঈদের জামাত। সকালে বন্দিদের সেমাই ও মুড়ি এবং দুপুরে পোলাও, গরুর মাংস, কোমল পানীয়, পান-সুপারি ও সালাদ সরবরাহ করা হবে। এছাড়া অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য গরুর মাংসের পরিবর্তে সরবরাহ করা হবে খাসির মাংস। আর রাতে খাবারের তালিকায় থাকবে সাদাভাত, রুই মাছ ও চনার ডাল।
জেলার তরিকুল ইসলাম আরো জানান, অন্য সময়ে ঈদের দিন ও ঈদের পরের দিন বন্দিদের জন্য বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার নিয়ে আসতেন স্বজনরা। তবে করোনার কারণে গত দুই বছর ধরে এ সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। এবারো বাড়িতে রান্না করা খাবার দিতে পারবেন না স্বজনরা। তাছাড়া আগে ঈদ উপলক্ষে লঘু অপরাধে দন্ডিত দু-একজন আসামি সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি পেলেও এবার এ ধরনের কোনো আসামি মুক্তি পাচ্ছে না। কারণ যেসব লঘু অপরাধে সাধারণ ক্ষমায় বন্দিদের মুক্তি দেয়া হয়, সে ধরনের আসামি চট্টগ্রাম কারাগারে নেই।
এর আগে, শনিবার কারাগারের নারী, পুরুষ ও শিশুসহ দুই হাজার বন্দিকে ঈদের জন্য পাঞ্জাবি, শাড়ি, লুঙ্গি, সালোয়ার কামিজ ও বাচ্চাদের পোশাক উপহার দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
ওই সময় নওফেল বলেন, সারাদেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়নে ছোঁয়া লেগেছে। যা থেকে কারাগারও বাদ যায়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকল নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন সাধ্যমতো মানুষের পাশে দাঁড়াতে। আমরা সেই মানবিক নেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে উনার নির্দেশে ঈদ উপহার বিতরণ করছি।