ডেস্ক : মহামারি করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দেশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকায় চলমান লকডাউন ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ ঈদের পর আরো এক সপ্তাহ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
আজ মঙ্গলবার দেশের একটি গণমাধ্যমকে দেয়া একান্ত আলাপচারিতা প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এটা সবাইকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। এ কারণে আমাদের পরিকল্পনা আছে লকডাউন আরো এক সপ্তাহ বাড়ানোর।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন আরো বলেন, এমনিতেই ১৬ মে পর্যন্ত দেশে কঠোর বিধিনিষেধ চলবে। সেদিনই জানানো হবে লকডাউন বাড়বে কি না। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির উপর।
তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক পরলেই নিরাপদ, আর না পরলে বিপদ- এই কথাটি মাথায় রাখতে হবে।
করোনা সংক্রমণ রোধে চাকরিজীবীসহ সবাইকে ঢাকায় রাখতে এবার ঈদের ছুটি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে বলে জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। এ কারণে আগামীকাল ২৯ রমজান অর্থাৎ বুধবার (১২ মে) অফিস খোলা থাকবে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বৃহস্পতি বা শুক্রবার (১৩, ১৪ মে) দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।
সাধারণত ২৯ রমজান থেকে ঈদুল ফিতরের ছুটি শুরু হয়। ঈদের আগের দিন, ঈদের দিন ও পরের দিন- এই তিনদিন ছুটি থাকে।
তবে রমজান মাস ৩০ দিন হলে ঈদের ছুটি একদিন বেড়ে হয় চারদিন। সেই হিসাবে এবার বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার (১২, ১৩ ও ১৪ মে) এবং রমজান মাস ৩০ দিনে হলে ১৫ মেও (শনিবার) ছুটি থাকার কথা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে বুধবার থেকে ছুটি শুরু হচ্ছে না।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান বিশেষ পরিস্থিতিতে এই ছুটি দেয়া হচ্ছে। আমরা চাই না কেউ এখান (ঢাকা) থেকে বাইরে চলে যাক। তাই ছুটি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে, যাতে সবাই ঢাকায় থেকে যায়। বুধবারও অফিস চলবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে, আপনাদের কর্মীদের ঢাকায় রেখে দেন।
তিনি আরো বলেন, এভাবে (গ্রামে) গেলে করোনা মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়বে। আমরা এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ছুটি সাজিয়েছি, ছুটি সংক্ষিপ্ত করেছি। ঈদ যদি বৃহস্পতিবারও হয় অসুবিধা নেই।
এর আগে মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ শিবলী সাদিক বলেন, আগামী বৃহস্পতিবার (১৩ মে) থেকে শুরু হচ্ছে ঈদুল ফিতরের ছুটি। সে হিসেবে শনিবার (১৫) পর্যন্ত তিনদিন ঈদের ছুটি থাকছে। এবার ঈদের দুই দিন ছুটি পড়েছে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার।
তিনি বলেন, বুধবার অফিস শেষ হয়ে বৃহস্পতিবার থেকে ঈদের ছুটি শুরু হবে। তিনদিন ছুটির পর আগামী রোববার থেকে যথারীতি অফিস চলবে।
করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে দেশে এখন বিধিনিষেধ চলছে। আগামী ১৬ মে পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ বহাল থাকবে। বিধিনিষেধের নির্দেশনা অনুযায়ী, জরুরি সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ রয়েছে। তবে শিল্প-কারখানা চলছে। সীমিত পরিসরে চলছে ব্যাংক লেনদেন। জেলার মধ্যে চলছে বাস। আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রয়েছে।
গত ৫ মে’র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি চাকুরেদের ঈদের ছুটিতে বাধ্যতামূলকভাবে কর্মস্থলে থাকতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঈদের ছুটিতে আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ কর্মস্থলে (অধিক্ষেত্রে) অবস্থান করবেন।