আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব শামিমা বেগম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীরকে। এ ছাড়া ইউজিসি’র সদস্য অধ্যাপক মো. আবু তাহের এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. জাকির হোসেন আখন্দকে তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়েছে। এই কমিটিতে সদস্য সচিব করা হয়েছে ইউজিসি’র পরিচালক (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) মোহাম্মদ জামিনুর রহমানকে।
এই অবৈধ নিয়োগ ও অনিয়ম প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে এর সঙ্গে সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে কমিটির সদস্যদের। আগামী সাত কর্মবিদসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
উপাচার্যের গণহারে অ্যাডহক নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়য়র উপাচার্য প্রফেসর ড. এম আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ কার্যক্রমসহ আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর পত্রের মাধ্যমে প্রশাসনিক কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখার জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু উপাচার্য আজ ০৬.০৫.২০২১ খ্রি. তারিখে তার শেষ কর্মবিদসে মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগ প্রদান করেছেন মর্মে মন্ত্রণালয় অবহিত হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উদ্ভব, যা অনভিপ্রেত। বিদায়ী উপাচার্য কর্তৃক অবৈধ জনবল নিয়োগের বৈধতা প্রাপ্তির সুযোগ নেই বিধায় এতদসংক্রান্ত বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হলো।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপাচার্য এম আবদুস সোবহান আজ বৃহস্পতিবার তার মেয়াদের চার বছর পূর্ণ করেছেন। শেষ দিনে তিনি নিজ বাসভবনে গণহারে নিয়োগ দিয়েছেন। তবে কতজনকে নিয়োগ দিয়েছেন তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।
একটি সূত্র বলছে, গণহারে নিয়োগে শিক্ষক ৯ জন, সেকশন অফিসার ২৩ জন, সহায়ক কর্মচারী ২৪ এবং উচ্চ ও নিম্ন সহকারী ৮৫ জনসহ মোট ১৪১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর আগে নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালামকে অব্যাহতি দেন উপাচার্য। তার স্থলে পরিষদ সেকশনের সহকারী রেজিস্ট্রার মামুন-উর-রশিদকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দায়িত্ব দিয়ে এই নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়।
পুলিশের নিরাপত্তায় উপাচার্যের ক্যাম্পাস ত্যাগ
আজ উপাচার্যের বাসভবনে গণহারে এই নিয়োগ দেওয়ার পর পুলিশের কড়া পাহাড়ায় ক্যাম্পাস ছাড়ের উপাচার্য এম আবদুস সোবহান। তার ক্যাম্পাস ত্যাগের আগে নিয়োগ নিয়ে ছাত্রীলগের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ নিয়ে সারা দিন উত্তপ্ত ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ায় অন্তর্বতীকালীন রুটিন দায়িত্ব পালনের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহাকে। আজ সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপসচিব শামিমা বেগম স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।