জাকির মোস্তাফিজ মিলু, ঠাকুরগাঁও : ঋণের চাপ সইতে না পেরে তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন, এমনট পুলিশের ধারণা। বাড়ির পাশের বাঁশঝাড়ে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় এক হাইস্কুল প্রধান শিক্ষকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ ।
বুধবার রাত ১টার দিকে সদর উপজেলার বড়গাঁও ইউনিয়নের কেশুরবাড়ী তাঁতিপাড়া এলাকা থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয় বলে জানান ঠাকুরগাঁওয়ের ভুল্লী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুলাল হোসেন।
মৃত রবীন্দ্র দেবনাথ (৫৫) সদর উপজেলার চরণখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
স্কুল শিক্ষক রবীন্দ্র দেবনাথের ছোট ভাই কৃষ্ণ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, “বুধবার বিকালে দাদা স্থানীয় একটি বাজারে যান। রাত ১ টার দিকে বাড়ির পাশে একটি বাঁশঝাড়ে দাদাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান প্রতিবেশীরা।
“দাদা বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। সেগুলো পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন; সে কারণে হয়ত আত্মহত্যা করেছেন। তার মৃত্যু নিয়ে পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই।”
কেশুরবাড়ী তাঁতিপাড়া এলাকার রহমত আলী নামে ঐ স্কুলের এক শিক্ষার্থী বলেন, কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে অপমান সহ্য করতে না পেরে স্যার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
একই গ্রামের আব্দুল গাফফার বলেন, একজন প্রধান শিক্ষকের এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফয়জুর রহমান বলেন, রবীন্দ্র দেবনাথ সহজ সরল ও একজন আদর্শ শিক্ষক ছিলেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে না পেরে মানসিক চাপে ছিলেন। ঋন পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে চাপের মুখে তিনি হয়তো আত্মহত্যা করেছেন।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি দুলাল হোসেন বলেন, বুধবার মধ্যরাতে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে পুলিশ যাওয়ার আগেই পরিবারের সদস্যরা রবীন্দ্র দেবনাথকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁওয়ের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি দুলাল হোসেন বলেন, “শিক্ষক রবীন্দ্র দেবনাথের পরিবার থেকে জানানো হয় তিনি ঋণগ্রস্ত ছিলেন। ঋণের চাপ সইতে না পেরে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।”
অভিযোগ না থাকায় স্কুল শিক্ষকের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান ওসি দুলাল হোসেন।