বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : করোনা মহামারির মধ্যে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার জন্য অনলাইনে ফরম পূরণের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ১২ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে তা শেষ হবে ২৫ আগস্ট।
এবারের এইচএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে কোনো নির্বাচনী পরীক্ষা হবে না, তাই এ সংক্রান্ত কোনো ফিও নেয়া যাবে না বলে জানিয়েছে শিক্ষা বোর্ড।
শনিবার (৩১ জুলাই) ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম আমিরুল ইসলাম সাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এবার বিজ্ঞান শাখার জন্য ১ হাজার ১৬০ টাকা, গতবার যা ছিল ১ হাজার ৬৯৫ টাকা, মানবিক এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখার জন্য ১ হাজার ৭০ টাকা করে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। কেন্দ্র ও ব্যবহারিক ফিসহ গতবছর যা ছিল ১ হাজার ৯৪০ টাকা।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরে বসে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ ও পরীক্ষার ফি অনলাইনে জমা দিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই পরীক্ষার্থী বা তার অভিভাবককে প্রতিষ্ঠানে যেতে বলা যাবে না। প্রয়োজনে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির নির্দেশে এবার রেজিস্ট্রেশন ফির অর্থ কমানো হয়েছে। এছাড়া রেজিস্ট্রেশন নবায়ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা যা গত বছর ২৫০ টাকা ছিল।
বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্ধারিত ফি-র অতিরিক্ত ফি আদায় করা যাবে না। এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কলেজের ফরম ফিলাপ প্যানেল বন্ধ করাসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এইচএসসির ফরম ফরম সংক্রান্ত কোনো সমস্যা বা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কন্ট্রোল রুমে ফোন করে (০২-৯৬৬৯৮১৫, ০২-৫৬৬১১০১৮১, ০২-৫৮৬১০২৪৮, ০১৬১০৭১১৩০৭, ০১৬২৫৬৩৮৫০৮, ০১৭২২৭৯৭৯৬৩) যোগাযোগে করতে বলা হয়েছে।
এদিকে করোনা মহামারির কারণে গত বছর এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। তার পরিবর্তে জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষার ফলের গড়ের ওপর এইচএসসির ফল দেয়া হয়। এ বছর ৮৪ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপরে পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট কাজ দেয়া শুরু হয়েছে। গতবারের মতো এবারও জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের নম্বর মূল্যায়ন করে আবশ্যিক বিষয়ের ফল দেয়া হবে। ডিসেম্বরের শুরুতে ঐচ্ছিক তিন বিষয়ের ওপর সংক্ষিপ্ত আকারে পরীক্ষা আয়োজন করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ১৫ জুলাই শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, এবার এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষায় যেসব বিষয়ে ব্যাবহারিক আছে, সেগুলোতে ২৫ এর পরিবর্তে ৫ নম্বরের পরীক্ষা হবে। ইতোমধ্যে এই শিক্ষার্থীদের কাজ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যবহারিক খাতা জমাও নিয়েছে।
এছাড়া ১২ নম্বরের এমসিকিউ এবং ২০-২৫ নম্বরের সৃজনশীল প্রশ্নের অংশের পরীক্ষা হবে। তবে উত্তরপত্র মূল্যায়ন ও ফল তৈরি করা হবে পূর্ণমান ধরে (১০০ নম্বরে)। এমসিকিউ অংশে ২-৩টি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। তিন ঘণ্টার পরীক্ষা দেড় ঘণ্টা, আর দুই ঘণ্টার পরীক্ষা এক ঘণ্টা নেয়া হবে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এবার বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সামাজিক বিজ্ঞান, কৃষি শিক্ষা, সাধারণ বিজ্ঞান, ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার মতো আবশ্যিক এবং চতুর্থ বিষয়ে কোনো অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে না। এসব বিষয়ে পরীক্ষাও দিতে হবে না। বিভাগভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক করে মোট ৯ বিষয়ে অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে। ১২ সপ্তাহ চলবে এ কার্যক্রম।
প্রতিটি বিষয়ে আটটি করে মোট ২৪টি অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে। অক্টোবরের মাঝামাঝি এ কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর এক মাস থাকবে পরীক্ষার প্রস্তুতির সময়। এর মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হলে নভেম্বরের মাঝামাঝি নেয়া হবে এসএসসি পরীক্ষা।
অন্যদিকে, ২৬ জুলাই এইচএসসি ও সমমানের অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া শুরু হয়েছে। ওই স্তরের শিক্ষার্থীদের ১৫ সপ্তাহে মোট ৩০টি অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে। এতেও গ্রুপভিত্তিক তিনটি করে নৈর্বাচনিক বিষয়ে মোট ছয়টি পত্রে (প্রথম পত্র ও দ্বিতীয় পত্র) এই অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে। প্রতি পত্রে পাঁচটি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে। তাদেরও সপ্তাহে দুটি করে অ্যাসাইনমেন্ট জমা থাকবে। আর ডিসেম্বরের শুরুতে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে।