বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: লক্ষ্য মাত্র ১০৯ রানের। শুরুতে বাবর আজমের উইকেট হারালেও জয় পেতে খুব বেগ পেতে হয়নি পাকিস্তানের। ধীরগোছের ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৮ উইকেটে বাংলাদেশকে হারিয়েছে পাকিস্তান। টানা দুই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করলো পাকিস্তান শিবির।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ১০৮ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ১১ বল হাতে রেখে দুই উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করে পাকিস্তান।
সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় পাকিস্তান। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে বাবর আজমকে বোল্ড করেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৫ বলে এক রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
এরপর অবশ্য ঝুঁকিতে যায়নি পাকিস্তান। রিজওয়ান ও ফখর ধীরলয়ে আগাতে থাকেন। এই জুটি দলকে নিয়ে যান ৯৭ রান পর্যন্ত। ডান হাতি লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ভাঙেন এই জুটি। আউট করেন রিজওয়ানকে। ৪৫ বলে চারটি চারে ৩৯ রান করেন পাকিস্তান ওপেনার।
৫১ বলে ৫৭ রানের দারুণ ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ফখর জামান। ৮ বলে ৬ রান করেন হায়দার আলী। বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে মেহেদী হাসান ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে থাকেন উইকেটশূন্য। তাসকিনও উইকেটশূন্য, ৪ ওভারে তিনি দেন ২২ রান। আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ৪ ওভারে ৩০ রানে পান এক উইকেট। মোস্তাফিজ চার ওভার করার সুযোগ পাননি। ২.১ ওভারে ১২ রানে তিনি পান এক উইকেট। এদিন মাহমুদউল্লাহ ব্যবহার করেছেন আট বোলার। কাঙ্ক্ষিত উইকেট থেকেছে অনেক দূরে।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরটা বরাবরের মতোই হ-য-ব-র-ল বাংলাদেশের। প্রথম ওভারেই বাজিমাত করেন দলে ফেরা পাক পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি। পঞ্চম বলে ফেরান সাইফ হাসানকে। অভিষেক ম্যাচে ১ রান করতে পারলেও সাইফ এদিন পেলেন গোল্ডেন ডাক।
শাহিনের ফুল লেংথ বল পিচ করে ভেতরে ঢোকে। বলের কাছাকাছিও ছিল না ব্যাট। বল লাগে প্যাডে। জোরালো আবেদন সাড়া দেননি আম্পায়ার তানভির আহমেদ। তবে রিভিউ নিয়ে সফল হয় পাকিস্তান।
দ্বিতীয় ওভারে বিদায় নেন মোহাম্মদ নাঈম। বাজে শট খেলে। মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলটি ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। নাঈম সেটিতেই ব্যাট চালিয়ে দিলেন জায়গায় দাঁড়িয়ে। ব্যাটের কানায় লেগে সহজ ক্যাচ যায় স্লিপে ফখরের হাতে। ৮ বলে ২ রান নাঈমের। দুই ওভারে দুই উইকেট নেই বাংলাদেশের।
তিন নম্বর পজিশনে নামেন আফিফ হোসেন। স্ট্রাইক পেয়েই শাহিন শাহর বলে দারুণ ফ্লিকে হাঁকান ছক্কা। পরের বলটি আফিফ ডিফেন্স করেন। নিজের বলে ফিল্ডিং করে ঘুরে দাঁড়িয়ে ব্যাটিং প্রান্তের স্টাম্পে সজোরে থ্রো করে বসেন আফ্রিদি। অথচ আফিফ ক্রিজ ছেড়ে বের হননি, রান নিতেও উদ্যত হননি।
আফ্রিদির সেই থ্রো গিয়ে লাগে আফিফের পায়ের পেছন দিকে। একটু খুঁড়িয়ে তখনই ক্রিজে পড়ে যান আফিফ। বোলার আফ্রিদি হাত উঁচিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের ফিজিও মাঠে ঢুকে শুশ্রূষা করার পর আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ান আফিফ।
আফিফ-শান্ত জুটিতে পঞ্চাশ পার করে বাংলাদেশ। দারুণ খেলতে খেলতে হতাশ করেন আফিফ। শাদাব খানকে উইকেট উপহার দিয়ে আসেন তিনি। শাদাব ডেলিভারি করার আগেই রিভার্স সুইপের পজিশনে চলে যান আফিফ। শাদাব বল দেন একটু টেনে। আফিফের ব্যাটের মাথায় লেগে বল ওঠে সোজা ওপরে। সহজ ক্যাচ নেন কিপার মোহাম্মদ রিজওয়ান। ২১ বলে ২০ রান করে ফেরেন আফিফ। তার ইনিংসে ছিল সমান একটি করে চার ও ছক্কা। ভাঙে শান্তর সাথে তার ৪৬ রানের জুটি।
নতুন ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহর সাথে আগাতে থাকেন শান্ত। উইকেটে গিয়ে দ্বিতীয় বলেই বিপদে পড়ে গিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। শাদাব খানের বলে প্যাডল স্কুপ করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। বল লাগে প্যাডে। আউট দেন আম্পায়ার তানভির আহমেদ। মাহমুদউল্লাহ নেন রিভিউ। তাতে দেখা যায়, বল ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। বেঁচে যান তিনি।
তারপরও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। দলীয় ৭৯ রানে বিদায় নেন তিনি। ১৫ বলে ১২ রান করে হারিস রউফের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন রিজওয়ানের হাতে।
এরপর ধারাবাহিক বিরতিতে উইকেট পড়েছে। রানও খুব একটা উঠেনি। দলীয় ৮২ রানে আউট নাজমুল হোসেন শান্ত। নিজের বলে নিজেই ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন শাদাব খান। ৩৪ বলে ৪০ রান করেন শান্ত। তার ইনিংসে ছিল ৫টি চারের মার।
আগের ম্যাচে দারুণ অপরাজিত ইনিংস খেলা মেহেদী এবার হাঁটলেন পেছনে পথে। ৮ বলে ৩ রান করে নওয়াজের বলে ক্যাচ দেন তার হাতেই। ১০২ রানের মাথায় আউট নুরুল হাসান সোহান। ১৩ বলে তিনি করেন ১১ রান।
আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ৮ ও তাসকিন ২ রানে থাকেন অপরাজিত। বল হাতে পাকিস্তানের হয়ে দুর্দান্ত করেন শাহিন শাহ। ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রানে তিনি নেন দুটি উইকেট। শাদাবও পান দুটি। নওয়াজ, ওয়াসিম ও হারিস নেন একটি করে উইকেট।