নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সঞ্চিয়া বিনতে আলির আশ্বাসে ফিরে গেলেন ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তারা। রবিবার, ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এমডি’র সাথে দেখা করেন বৈষম্যবিরোধী অফিসার্স ফোরামের ১০ জন প্রতিনিধি।
তারা জানান, এমডি অফিসারদের পদোন্নতির বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছেন বলে আশ্বাস দেন। এই লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ে ২৫৪৯ জন কর্মকর্তাকে বিশেষ বিবেচনায় পদোন্নতি দেয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। অফিসার্স ফোরামের প্রতিনিধিরা এ সময় কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হলে ভাইভার প্রয়োজনহীনতার প্রতি আলোকপাত করেন এবং মন্ত্রণালয় থেকে কোনো সদুত্তর আসার আগ পর্যন্ত ভাইবা বন্ধ রাখার আহ্বান জানান। এমডি এটি করা সম্ভবপর হলে তাই বাস্তবায়ন করবেন বলে আশ্বাসও দেন।
এর আগে ৩০ নভেম্বর শনিবার পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী দশম গ্রেডের প্রায় ১২০০ কর্মকর্তা বৈষম্যবিরোধী অফিসার্স ফোরামের ব্যানারে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় সামনে অবস্থান নেন। কিন্তু তাদের নির্ধারিত সময় সকাল ১০ টার আগে থেকেই জাতীয়বাদী ফোরামের ব্যানারে কৃষি ব্যাংকের সামনে অবস্থান নেয় কৃষি ব্যাংকের অন্য আরেকটি দল। তারা এডভোকেট আলিফ হত্যার প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করতে থাকেন। অহেতুক কাল বিলম্ব করে বেলা দেড়টায় তারা বলাকার মোড় থেকে কৃষি ব্যাংকের অভিমুখে অগ্রসর হতে থাকলে ব্যাংকের অপরপক্ষটির নিকট বাধার সম্মুখীন হয়। এ সময় ওই পক্ষের হাতে লাঠি, ক্রিকেট ব্যাট, হকিস্টিক দেখা যায়। কিন্তু সহস্রাধিক কর্মকর্তার বাধার সম্মুখীন হয়ে তারা ঐ স্থান ত্যাগ করে চলে যায়।
দশম গ্রেডের কর্মকর্তারা দাবি করেন, জাতীয়তাবাদের ব্যানারে অপর যে পক্ষটি কর্মসূচি পালন করছে তারা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাবাধি পক্ষ। তারা আওয়ামী লীগের সংগঠন স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে তারা এখন বোল পাল্টে জাতীয়তাবাদী ফোরামের ব্যানারে নতুন করে আত্মপরিচয় প্রকাশ করেছেন।
দশম গ্রেডের কর্মকর্তারা সারাদিন অপেক্ষা করেও এমডি’র দেখা না পেয়ে জরুরী পরিষেবার কথা চিন্তা করে কর্মস্থলে ফিরে যান। পরের দিন রবিবার সকালে আবার মানববন্ধন কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তীতে দুপুর একটার সময় ১০জনের একটি প্রতিনিধি দল ব্যাংকটির এমডি’র সাথে দেখা করার সুযোগ পায়। আলোচনার প্রাক্কালে তারা কয়টি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো; তাদের উপর নির্লজ্জ উস্কানিমূলক হামলার বিচার, আন্দোলনকারীদের উপর কোনো রকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া এবং অন্যান্য ব্যাংকের মতো সঠিক সময়ে পদোন্নতি এবং উর্ধতন কর্মকর্তাদের ভাইবা পদ্ধতির বিলোপ। একই সাথে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠির কোনো সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত ভাইভা স্থগিত করার আহ্বান জানান প্রতিনিধিরা।
এমডি তাদের সব দাবি শুনেন এবং ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সংস্কারের অনেকগুলি পরিকল্পনা তার আছে। তিনি দশম গ্রেডের কর্মকর্তাদের দাবিগুলোও বাস্তবায়নের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। এমডির আশ্বাস পেয়ে দশম গেটের কর্মকর্তারা বাড়ি ফিরে যান। কর্মকর্তারা এ প্রতিবেদককে জানান, কোনো হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলে তারা ঘরে বসে থাকবেন না।