বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : ঢাকার গুলশানের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় কথিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি এই চাঞ্চল্যকর মামলার শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পিয়াসাকে এদিন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোপূর্বক ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হয়। অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক পিয়াসাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কের ১৯ নম্বর বাসার একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় আদালতের নির্দেশে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে গুলশান থানায় গত ৭ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের হয়। পরে মামলার তদন্তভার দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের এ মামলার প্রধান আসামি সায়েম সোবহান আনভীর। এ ছাড়া তার বাবা, মা ও স্ত্রীসহ মোট আটজনের নাম আসামির তালিকায় রয়েছে।
গত ৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এর বিচারক মামলাটি গ্রহণ করেন। কুমিল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত মো. সফিকুর রহমানের ছোট মেয়ে মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়ার করা এ নালিশি মামলার এজাহারে চাঞ্চল্যকর তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
ডাক্তারি পরীক্ষার বরাত দিয়ে এজাহারে বলা হয়েছে, মৃত্যুর আগেও মুনিয়া ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ভোরে যশোরে পালিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলেন। মুনিয়া দু-তিন সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তার পরনের জামাকাপড় ছেঁড়া ছিল ও পুরুষের ডিএনএ মিলেছে। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে এ কলেজছাত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ছয় নম্বর আসামি সাইফা রহমান মিম এক নম্বর আসামি সায়েম সোবহান আনভীরের গার্লফ্রেন্ড ও সাত নম্বর আসামি কথিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার (মাদকসহ গ্রেপ্তারের পর বর্তমানে কারাবন্দি) সঙ্গেও উক্ত আসামির বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। পিয়াসা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ভিকটিম মুনিয়াকে বিভিন্ন সময় ফোন করে আনভীরের সঙ্গ ত্যাগ করতে বলে এবং তার মাধ্যমেই দুই নম্বর আসামি আনভীরের মায়ের কাছে ভিকটিম সম্পর্কে কুৎসা রটিয়ে হত্যার প্ররোচনা দেয়। পিয়াসার মাধ্যমেই মুনিয়াকে বাসায় ডেকে নিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে গ্রামের বাড়িতে যেতে বাধ্য করে প্রধান আসামির পরিবার।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এর আদালতে মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ওই আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বেগম মাফরোজা পারভীন মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।