বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামী টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পুলিশ পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে কক্সবাজার জেলা কারাগারের সাধারণ সেল থেকে সরিয়ে কনডেম সেলে নেওয়া হয়েছে।
জেলা কারাগারের সুপার মো. নোছার আলম সোমবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলী এতদিন কারাগারে ভিআইপি সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছিলেন। ফাঁসির আদেশ পাওয়ার পরপরই তাদের সেই সুবিধাগুলো বাতিল করা হয়েছে।
কারাগারের একটি সূত্র জানায়, কয়েদির পোশাক পরিয়ে কনডেম সেলে নেওয়ার সময় অপ্রকৃতিস্থ আচরণ করেন ওসি প্রদীপ। কারারক্ষীদের হাতেপায়ে ধরে তাকে মাপ করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে তিনি কান্নাকাটি করতে থাকেন। তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামী লিয়াকত বিমর্ষ থাকলেও স্বাভাবিকভাবে কনডেম সেলে প্রবেশ করেন।
এর আগে, সোমবার বিকেলে সিনহা হত্যা মামলায় অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় প্রদীপ কুমার দাশ ও মো. লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল।
আলোচিত এ মামলায় এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাগর দেব, রুবেল শর্মা, পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দীনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সাজা দেন আদালত।
এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এপিবিএনের এসআই শাহজাহান আলী, কনস্টেবল মো. রাজীব, মো. আব্দুল্লাহ, পুলিশের কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, লিটন মিয়া ও পুলিশের কনস্টেবল আব্দুল্লাহ আল মামুনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কারাগারের কনডেম সেল ৬ ফুট বাই ৬ ফুট একটি ছোট কক্ষ। যেখানে ফাঁসির আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে পর্যন্ত রাখা হয়। অন্ধকার এ ঘরের ভেতরেই থাকে শৌচাগার। যেখানে একজন সুস্থ মানুষের পক্ষে বেঁচে থাকা কঠিন, সেখানে বসেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকত। তবে দুজনের আইনজীবিই জানিয়েছেন, রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।