বঙ্গ নিউজ বিডি ডেস্ক: কবি হেলাল হাফিজের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) এক শোক বার্তায় তিনি কবির পরকালীন জীবনের শান্তি কামনা এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
দ্রোহ ও প্রেমের কবি হেলাল হাফিজের মৃত্যু বাংলা ভাষা ও সাহিত্য অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি উল্লেখ করে বার্তায় প্রধান বলেন, কবি হেলাল হাফিজ ছিলেন তারুণ্যের শক্তি এবং স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে এক সাহসী কণ্ঠ। তার কালজয়ী কবিতার মতোই তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন মানুষের হৃদয়ে।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক হেলাল হাফিজকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনায় হেলাল হাফিজের জন্ম হয়। ১৯৮৬ সালে তার প্রথম কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশিত হয়। কবিতার জন্য ২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান।
১৯৬৫ সালে হেলাল হাফিজ নেত্রকোনা দত্ত হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৭ সালে নেত্রকোনা কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পাস করেন। ওই বছরই কবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় ১৯৭২ সালে তিনি তৎকালীন জাতীয় সংবাদপত্র দৈনিক ‘পূর্বদেশে’ সাংবাদিকতায় যোগদান করেন।
১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন দৈনিক পূর্বদেশের সাহিত্য-সম্পাদক। ১৯৭৬ সালের শেষ দিকে তিনি দৈনিক ‘দেশ’ পত্রিকার সাহিত্য-সম্পাদক পদে যোগদান করেন। সর্বশেষ তিনি দৈনিক যুগান্তরে কর্মরত ছিলেন।
কবিতায় অসামান্য অবদানের স্মারক হিসেবে হেলাল হাফিজকে ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়। এ ছাড়াও তিনি পেয়েছেন- যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার (১৯৮৬), আবুল মনসুর আহমদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৭), নেত্রকোনা সাহিত্য পরিষদের কবি খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কার ও সম্মাননা।
কবি হেলাল হাফিজের লেখালেখির সূচনা ঘটে ষাটের দশকের উত্তাল সময়ে। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় রচিত ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ কবিতাটি তাকে কবিখ্যাতি এনে দেয়। সাংবাদিকতা করার দরুণ কবি ওই সময়ের উত্তাল পরিবেশের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হতে পেরেছিলেন। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ লেখার ঠিক ২৬ বছর পর ২০১২ সালে দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ লিখেন। বহুল প্রতিক্ষীত সেই ‘কবিতা একাত্তর’ও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।
স্বল্পপ্রজ এই কবি বিশের দশকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তার কবিতার ভাষা সঠিক সময়ে সঠিক শব্দকে ধারণ করায় সময়ের প্রাসঙ্গিক কবি বলেই পরিচিত। তাছাড়া প্রেম ও দ্রোহের কবি হিসেবেও তিনি জনপ্রিয়।