বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ দ্বিতীয় ঢেউ এ ক্রমাগত অবনতি, সার্বিক পরিস্থিতি, হাসপাতালের সুযোগ সুবিধা ও শয্যা বৃদ্ধি বিষয়ে বিপিএমসিএ’র সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের সাথে মত বিনিময় সভায়’ মন্ত্রী এমন আশঙ্কার কথা জানান।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, ‘গত এক মাস আগে আক্রান্তের হার ছিল মাত্র ২ শতাংশ। এখন এটি প্রায় ২০ শতাংশে চলে গেছে। এখন দিনে প্রায় ৫ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। মৃত্যু সংখ্যাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের স্বাস্থ্যখাতের উদ্যোগে সরকারিভাবে দ্রুততার সঙ্গে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই প্রায় আড়াই হাজার বেড বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, ৪০ টি নতুন আইসিইউ বেড স্থাপন করা হচ্ছে। ঢাকা নর্থ সিটি করপোরেশন হাসপাতালটি কভিড ডেডিকেটেড করা হচ্ছে। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, শেখ হাসিনা বার্ণ ইন্সটিটিউট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালসহ দেশের বেশিরভাগ হাসপাতালে শত শত শয্যা কভিড ডেডিকেটেড করা হচ্ছে। কিন্তু প্রতিদিন যদি ৫০০-১০০০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে থাকে তাহলে গোটা ঢাকা শহরকে হাসপাতাল করে ফেললেও রোগী রাখার জায়গা দেয়া যাবে না। এর জন্য যা করার এখনই করতে হবে। অর্থাৎ এই মুহুর্তে যা করতে হবে তা হচ্ছে, যে যে স্থান থেকে করোনা সৃষ্টি হচ্ছে সেই সকল স্থানে এখনই জরুরি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
সবাইকে ১৮দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সকল পর্যটন কেন্দ্র, হোটেল, যানবাহনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র সমূহে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিয়ে-সাদি, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, পিকনিক আয়োজন বন্ধ রাখতে হবে। সকল মানুষকে মুখে মাস্ক পড়তে হবে। কারণ এখনই করোনাকে নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারলে নিকট ভবিষ্যতে করোনাকে আর খুব সহজে নিয়ন্ত্রণ করা ভীষণ কঠিন হয়ে পড়বে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সভায় বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের মালিক, পরিচালক ও চেয়ারম্যানদেরকে করোনার বেড সংখ্যা কমপক্ষে দেড় থেকে দুই হাজার বৃদ্ধি করার অনুরোধ জানান।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ‘এই মুহুর্তে করোনাকে মোকাবেলা করাই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সাধারণ মানুষ এখন বেপরোয়া চলাফেরা করছে। এটিকে থামাতেই হবে। এর পাশাপাশি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও করোনা মোকাবেলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।’
সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিকট প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এন্টিবডি টেস্টের অনুমোদন দিতে অনুরোধ জানানো হয়।
এসময় মন্ত্রী ঢাকার বড় বড় প্রাইভেট মেডিকেলগুলোকে এন্টিবডি টেস্টের অনুমোদন দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের নির্দেশনা দেন।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুবিন খানের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন দে র্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ও বিপিএমসিএর উপদেষ্টা ডা. মো. এনামুর রহমান, বিপিএমসিএ’র সাধারণ সম্পাদক ও আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান ড. আনোয়ার গোসেন খান, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম।