বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষার আড়াই কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন খুলনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রকাশ কুমার দাশ (৪৫)। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে ও হিসাব করে জানা গেছে ২ কোটি ৫৭ লাখ ৯৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। সোমবার বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। আইনজীবীকে দিয়ে মামলার এজাহার লেখা হয়েছে। এখন খুলনা সদর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
খুলনা সিভিল সার্জন কার্যালয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, খুলনা জেনারেল হাসপাতালে বিদেশগামীদের করোনার নমুনা পরীক্ষার ফি গ্রহণ ও ল্যাব ইনচার্জের দায়িত্বে ছিলেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রকাশ কুমার দাশ। তিনি ২০২০ সালের ২ জুলাই থেকে প্রতিদিন যতজনের নমুনা পরীক্ষা করাতেন তার চেয়ে কম সংখ্যক মানুষের নাম খাতায় লিপিবদ্ধ করতেন। বাকি টাকা আত্মসাৎ করতেন। প্রকাশ যে তালিকা দিতেন সে অনুযায়ী ক্যাশিয়ার টাকা বুঝে নিয়ে ব্যাংকে জমা দিতেন। এ বিষয়ে সন্দেহ হওয়ার পর চলতি বছরের এপ্রিল মাসে চিঠি দিয়ে প্রকাশের কাছে লিখিত হিসাব চাওয়া হয়।
প্রকাশ কুমার বিভিন্ন তালবাহানা করে সময়ক্ষেপন করতে থাকেন। এরপর চলতি বছরের ২২ আগস্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি ১৬ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, যে পরিমাণ টাকা জমা হওয়ার কথা ছিল তার চেয়ে ২ কোটি ৫৭ লাখ ৯৭ হাজার টাকা কম জমা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি মৌখিকভাবে তাকে জিজ্ঞাসা করলে প্রকাশ কুমার হিসাবে গরমিল রয়েছে বলে স্বীকার করেন। এরপর তাকে শোকজ করা হয় এবং লিখিতভাবে হিসাব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) তার হিসাব ও টাকা জমা দেওয়ার শেষ দিন ধার্য ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে অফিসে বসে হিসাব করার একপর্যায়ে প্রকাশ কুমার কাউকে কিছু না জানিয়ে অফিস থেকে দ্রুত চলে যান। এরপর থেকে তিনি আর অফিসে আসননি। তাকে দ্বিতীয়বার শোকজ করে তার বাসার ঠিকানায় চিঠি পাঠানো হয়। তার বাসায় লোক পাঠিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, প্রকাশ কুমার দাশ যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রকাশ কুমারের সন্ধানে তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি জানিয়েছেন তার সঙ্গে প্রকাশের কোনো যোগাযোগ নেই।