বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : মোংলা সমুদ্র বন্দর শহরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার বাড়তে থাকা ও অন্যান্য সমস্যার কারণে প্রয়োজনীয় সেবাদান ব্যহত হচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। করোনা রোগী বাড়তে থাকায় পালিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতালে ভর্তি থাকা অন্যান্য রোগীরা। একই কারণে রোগী ভর্তির হারও কমে গেছে। শূন্য অবস্থায় আছে হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান ও সহকারী ল্যাব টেকনিশিয়ানের ছয়টি পদ। অকেজো হয়ে পড়ে আছে দুটি অ্যাম্বুলেন্স। চালু নেই সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম। তথ্যগুলো নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটির স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জীবিতেশ বিশ্বাস।
জীবিতেশ বিশ্বাস বলেন, ‘হাসপাতালের শূন্য পদগুলো পূরণ ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম চালু এখন সময়ের দাবি। পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা না থাকায় করোনায় আক্রান্ত রোগীদের খুলনায় পাঠাতে হচ্ছে। যেসব রোগীর অক্সিজেনের অতি প্রয়োজন বা বিভিন্ন পরীক্ষার দরকার, তাদেরও খুলনায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
চিকিৎসক জীবিতেশ আরও বলেন, ‘টেকনিশিয়ান না থাকায় কয়েক দিন আগেও ননটেকনিশিয়ানদের দিয়ে নমুনা সংগ্রহ করানো হতো। জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশে পাশ্ববর্তী উপজেলা রামপাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সএর টেকনিশিয়ানকে মোংলায় আনার পর গত সপ্তাহ থেকে সপ্তাহে ৬ দিন এখানে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। টেকনিশিয়ান না থাকায় বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন। এসব সল্পতার মধ্যেও হাসপাতালটিতে করোনার যে ইউনিট রয়েছে সেখানে একসঙ্গে ১৫ জনকে সেবা দেওয়া যায়। মোংলায় করোনা সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ জন রোগী ভর্তি হয়ে এখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু এখন হাসপাতালের রোগীরা পালিয়ে যাচ্ছেন।’
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলেন, ‘হাসপাতালে করোনা রোগী বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ রোগী পালিয়ে যাচ্ছে। আজ রোববার সরেজমিনে হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় শূন্য পড়ে রয়েছে হাসপাতালের পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডের বেডগুলো। রোগীও আসছে কম। ডা. জীবিতেশ বিশ্বাস জানান, হাসপাতালে আগে যেখানে প্রায় প্রতিদিন আড়াইশ রোগী আসত, এখন তা অর্ধশততে নেমে এসেছে। করোনার নমুনা পরীক্ষা করতে আসাদের পরিমান বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ রোগীরা আসছেন না। অনেকেই হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন।’
আজ রোববার হাসপাতালে ৪৪ জন করোনা পরীক্ষার নমুন দেন। তাদের মধ্যে ২৪ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গত ২০ এপ্রিল থেকে মোংলায় র্যাপিড অ্যান্টিজেন্ট টেস্টের মাধ্যমে করোনার পরীক্ষা শুরু করা হয়। এর পর ১৩ জুন পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্ব্য কমপ্লেক্সে ৬১৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৩৬ জনের করোনা পজিটিভ হয়। পরীক্ষণ বিবেচনায় উপজেলায় করোনা আক্রান্তের হার শতকরা ৫৫ ভাগ। এখন পর্যন্ত করোনায় ও এর উপসর্গ নিয়ে উপজেলায় মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের।