রাজ্য সরকারের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বাংলায় কোভিড টিকার সনদে থাকবে মমতা ব্যনার্জির ছবি। আর তাতেই আপত্তি জানিয়েছেন গেরুয়া শিবির। এতদিন পর্যন্ত করোনার টিকাকরণের পর যে সনদ দেওয়া হতো সেখানে নরেন্দ্র মোদির ছবি থাকতো। কেন্দ্রের কো-উইন অ্যাপ থেকে ডাউনলোড করা টিকাকরণের সনদে মোদির ছবি থাকে। সেখানে বার্তা হিসাবে থাকতো ‘দাওয়াই ভি, ওউর কড়াই ভি’ (ওষুধও চলবে, ঘরোয় টোটকাও চলবে)।
তবে টিকাকরণের সনদে মোদির ছবি থাকা নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সদ্য সমাপ্ত রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনে এই নিয়ে অভিযোগও দায়ের করেছিল তারা। সে সময় তৃণমূলের অভিযোগ ছিল টিকাকারণের সনদে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করছে বিজেপি।
এদিকে, এবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ব্যক্তিদের বিনামূল্যে যে করোনা টিকা দেওয়া হচ্ছে তাতে দেওয়া হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যনার্জির ছবি দেওয়া সনদ। সঙ্গে বার্তা দেওয়া হচ্ছে ‘বি আ্যলার্ট, বি সেফ’ (সজাগ থাকুন, নিরাপদে থাকুন)।
গতকাল শুক্রবার থেকেই রাজ্য সরকারের তরফে শুরু হয়ে যায় এই সনদ বিলি। পার্ক সার্কাসের একটি মলে পুরসভার ড্রাইব-ই-ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচিতে দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ওই সনদ। রাজ্য সরকারই এই টিকাকরণের সব খচর বহন করছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর টিকা গ্রহীতার মোবাইলে একটি এসএমএস পাঠাবে। সেখানে থাকা লিঙ্ক থেকেই রাজ্যের সনদ মিলবে।
অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপে মোটেই খুশি নন রাজ্যটির প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের নেতা শমীক ভট্টাচার্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ‘তৃণমূল কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী পদের কোনও সম্মান করে না। আমাদের রাজ্যের সরকার এমন ব্যবহার করছে যেন তারা অন্য দেশে বসবাস করে, ভারতে নয়। তারা যেন মানতেই রাজি নয় যে পশ্চিমবঙ্গ ভারতেরই একটি প্রদেশ।’
এ ব্যাপারে রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী ও কলকাতা পুরসভার বর্তমান প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম জানান, ‘১৮-৪৪ বছর বয়সী ব্যক্তিদের কোভিড টিকাকরণের জন্য যেহেতু রাজ্য সরকার এই টিকা কিনছে তাই ওই সনদে আমরা মমতা ব্যনার্জির ছবি দিচ্ছি। আর ৪৪ বছরের উর্দ্ধে যাদেরকে কেন্দ্রীয় সরকার টিকা দিচ্ছে সেখানে প্রধানমন্ত্রীর ছবি আছে।’
তবে করোনার ভ্যাকসিন না পেয়ে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে রাজ্যের বহু সাধারণ মানুষকে। ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না ভ্যাকসিন। কোথাও কোথাও এনিয়ে প্রবল জনরোষও তৈরি হচ্ছে। এরই মধ্যে টিকাকরণের সনদে ‘ছবি’র লড়াই জারি রয়েছে মোদি-মমতার মধ্যে।