বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : এক সময়ে যে কলেজে মালির কাজ করতেন, ছিলেন নিরাপত্তারক্ষী দায়িত্বে, সেই কলেজেরই অধ্যক্ষ হয়েছেন এক ব্যক্তি। তার জীবনের গল্পটা অনেকটা সিনেমার মতো মনে হলেও অধ্যক্ষ হওয়ার পেছনে তার সংগ্রামের কাহিনি উদ্ধুদ্ধ করার মতোই।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ব্যক্তির ঈশ্বর সিংহ বদগাহ। ভারতের ছত্তীসগঢ়ের বৈটলপুরের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে তার জন্ম। গ্রামের স্কুলেই পড়াশোনা করে বেড়ে ওঠেন। পরিবারে আর্থিক অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। ফলে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার পরই সংসারের জোয়াল কাঁধে তুলে নিতে হয় তাকে।
চাকরির সন্ধানে বৈটলপুরের গণ্ডি ছাড়িয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন ভিলাই শহরে। সেখানে প্রথমে একটি কাপড়ের দোকানে মাসিক ১৫০ টাকা বেতনে কাজ নেন তিনি। কিন্তু প্রতকূল পরিস্থিতি তার পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা দমাতে দেননি। ফলে কাজ করতে করতেই শহরের কল্যাণ কলেজে ভর্তি হন।
কলেজে ভর্তি হওয়ার বেশ কয়েক দিন পর কলেজেরই বাগানে মালির কাজ নেন। চাষি পরিবারের ছেলে, ফলে গাছগাছালি সম্পর্কে ভালোই ধারণা ছিল ঈশ্বরের। বেশ কিছু দিন মালির কাজ করার পর, কলেজে চৌকিদারের কাজও জুটিয়ে নেন। মাঝে মাঝে কলেজের নির্মাণকাজে সুপারভাইজারের কাজেও সহায়তা করতে শুরু করেন।
নির্মাণকাজে ইশ্বরের দক্ষতা দেখে কলেজ কর্তৃপক্ষ খুশি হয়। তাকে কলেজের সব নির্মাণকাজের সুপারভাইজারের দায়িত্ব দেওয়া হয় পূর্ণ সময়ের জন্য। ইতিমধ্যেই ১৯৮৯ সালে স্নাতক শেষ করেন তিনি। তাকে কলেজে স্থাপত্যের শিক্ষকতার জন্য আংশিক সময়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি তিনি এমএড, বিপিএড এবং এমফিল করেন। এরপর তাকে সহকারী অধ্যাপকের পদে নিয়োগ করা হয়। যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাই তার অধ্যক্ষ হওয়ার পথ মসৃণ করে দেয়।
ঈশ্বর সিংহ বদগাহ বলেন, ‘একজন মালি থেকে অধ্যক্ষ হওয়ার পথটা মোটেই সহজ ছিল না। এর পেছনে নিজের যেমন খিদে ছিল, তেমনই কলেজের প্রত্যেক শিক্ষক এবং পড়ুয়াদের সহযোগিতা এই পথকে একটু একটু করে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে।’ ১৯৮৯ সালে কলেজের মালির কাজ করতেন ঈশ্বর। ২০০৫ সালে সেই কলেজেরই অধ্যক্ষ হন তিনি।