কৃষি অফিসের সূত্রমতে, এবার কুমিল্লার ১৭উপজেলায় এক লক্ষ ৫৮হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো। চাষ হয়েছে এক লক্ষ ৫৮হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে। এবার উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষ করা হয় এক লক্ষ ২৯হাজার হেক্টর জমিতে। হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করা হয় ৩০হাজার হেক্টর জমিতে। স্থানীয় জাতের ধান চাষ হয় ৩০ হেক্টর জমিতে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার ৬ লাখ ৩২ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
লাকসামের উত্তরদা ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৈশাখের খরতাপে চার দিক পুড়ছে। জমিতে সোনালি রঙ ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে ধান। ধান কাটছেন কৃষক ও শ্রমিকরা। কেউ পার করে বাড়ি আনছেন। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলতে থাকে ধান ছাড়ানোর মেশিন। সর্বত্র গরগর শব্দ। কোনো বাড়িতে পায়ে চাপা, কোথাও ডিজেল ইঞ্জিনের সাথে ধান ছাড়ানোর মেশিন সংযুক্ত করে ধান ছাড়ানো হচ্ছে।
লাকসামের মনপাল গ্রামের মঞ্জুমা বেগম জানান, নিচু এলাকা। এখানের মাঠে এক ফসল হয়। এই ফসল দিয়ে পরিবারের সারা বছরের খাবারের যোগান দিতে হয়। তাই বোরো মৌসুম এলে ব্যস্ততা বেড়ে যায়। সময় মতো রান্না, খাবারের কথা ভুলে যেতে হয়। চিড়া মুড়ি খেয়ে ভোরে কাজে নামতে হয়। নারীরা বেশিরভাগ বাড়িতে ধান ছাড়ানোর ও শুকানোর কাজ করেন। পরিবারের পুরুষরা শ্রমিকদের সাহায্য করতে মাঠে চলে যান।
কৃষক আলী আকবর বলেন, প্রতি শ্রমিকের দৈনিক বেতন ৮০০ টাকা। তিন বেলা খাবার দিতে হয়। ২৪শতক জমিতে চারজন শ্রমিকের জন্য ৪০০০টাকা খরচ। মোট খরচ ১১ হাজার টাকা। ধান পেয়েছি ৮০০০ টাকার।
রংপুর থেকে আসা শ্রমিক করিম মিয়া জানান,এখন লকডাউনের কারণে বাস চলে না। বিভিন্ন স্থানে চাঁদা দিয়ে তাদের আসতে হয়েছে। তাই বেশি মজুরি নিতে হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন,এখন বোরো ফসল তোলায় ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষক-কৃষানিদের। ভয় শিলা বৃষ্টি নিয়ে। ভালো ফসল হয়েছে। কোনো সমস্যা না হলে আশা করছি ৬লাখ ৩২ হাজার মেট্রিক টনের বেশি ধান উৎপাদন হবে। ইতোমধ্যে ১০ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। কৃষকদের বলা হচ্ছে,৭৫ ভাগ পাকলেও যেন ধান কেটে ফেলে। শ্রমিকের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রশাসনের সাথে কথা হয়েছে। বাইরের শ্রমিক আসা শুরু হয়েছে। আশা করছি ধান কাটায় কোন সমস্যা হবে না।