বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: সাভারের বোট ক্লাবে মারধর ও যৌন হেনস্তার ঘটনায় গত কয়েকদিন ধরে একাধিক সংবাদ সম্মেলন করেছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। এদিকে গুলশানের অল-কমিউনিটি ক্লাবের ঘটনারও কোনো মিল পাচ্ছে না পুলিশ।
বোট ক্লাবের ঘটনার প্রায় ১০দিন পর গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবের ঘটনা আলোচনায় আসে। গত বুধবার অল কমিউনিটি ক্লাব কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, গত ৮ জুন রাতে আমাদের ক্লাবে একটি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছিল। ক্লাব বন্ধের সময় হয়ে এসেছিল। তখন কয়েকজন লোক আসে ক্লাবে প্রবেশের জন্য। গেটে দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ডরা ফোন করে সেটা আমাদের জানায়।
তিনি বলেন, আমাদের ক্লাবের নিজস্ব কিছু নিয়মকানুন আছে। ক্লাবে প্রবেশের ড্রেস কোড রয়েছে। সেদিন এখানে যারা এসেছিলেন তাদের মধ্যে একজন ছিলেন হাফপ্যান্ট এবং স্যান্ডেল পরা। দুজন মেয়ে ছিলেন। তখন আমাদের ফুড অ্যাডভাইজার বলেন, আপনারা ক্লাবের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। এটা বলায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে যান। এ সময় তারা যে সদস্যের মাধ্যমে ক্লাবে আসেন তিনিও তাদেরকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু তারা যেতে চাননি। পরে বাধ্য হয়ে আমাদের সেই সদস্য চলে যান। আমাদের ক্লাবের সব কর্মকর্তা চলে যান। শুধু দুজন ওয়েটার ছিলেন।
আলমগীর ইকবাল উল্লেখ করেন, এরপর তারা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করে পুলিশ ডাকেন। পুলিশ এলে তারা ক্লাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ করেন। কিন্তু তখন ক্লাবে আমাদের তেমন কেউই ছিল না। কারণ, তখন রাত ১টা থেকে দেড়টা। ওই সময় তাদের মধ্য থেকে একটা মেয়ে ক্লাবের ১৫টি গ্লাস, ৯টি এসট্রে এবং বেশ কিছু হাফ প্লেট ভাঙচুর করেন। পরে জানতে পারি, তিনি পরীমনি। পুলিশও ভাঙচুরের সত্যতা পায়।
তিনি জানান, পরে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা ঘটনার বিষয়ে তাদের ঊর্ধ্বতনদের জানায়। তারা ওই পুলিশ সদস্যদের চলে যেতে বলেন। এ ঘটনায় ক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী যে সদস্যের মাধ্যমে তারা এসেছিলেন, তাকে আমরা শোকজ করেছি।
এ ব্যাপারে ক্লাব কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করলেও থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন কি না তা নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। আবার কিছু গণমাধ্যম নায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে জিডি করা হয়েছে বলে খবর ছেপেছিলো।
তবে পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, ওই রাতে ক্লাবে পরীমনির অসদাচরণের সংবাদ পুলিশকে জানানো হয়েছিলো। সেই ক্লাবেও গিয়েছিলো পুলিশ। পরে বিষয়টি পুলিশের পক্ষ থেকে লিপিবদ্ধ করা হয়।
এদিকে গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগকে গভীর ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন পরীমনি। তিনি বলেন, এটা একটা ষড়যন্ত্র। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় পর এই ঘটনা কেন সামনে আসল বুঝতে পারছি না। বোট ক্লাবে আমাকে যৌন হেনস্তা ও হত্যাচেষ্টার ঘটনা ধামাচাপা দিতে একটা মহল সুপরিকল্পিতভাবে এমন অভিযোগ তুলেছে, যেটা মোটেই সত্য নয়।
এর আগে গত ৯ জুন গভীর রাতে ঢাকা বোট ক্লাবে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমি নামে দুই ব্যবসায়ী তাকে মারধর ও যৌন হেনস্তা করার অভিযোগ তোলেন পরীমনি। গত রোববার রাতে তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এবং নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে এই খবর প্রকাশ করেন। পরদিন সাভার মডেল থানায় বাদী হয়ে তিনি মামলাও করেন। ওইদিনই গ্রেপ্তার করা হয় প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ মোট পাঁচজনকে। বর্তমানে তারা প্রত্যেকে সাত দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।