বঙ্গ নিউজ বিডি প্রতিনিধি : কোনো রকম ভূমিকা, ভান ভনিতা না করেই শিরোনাম নিয়ে আলোচনা শুরু করা যাক। আজকের বিষয়ের পরিধি অনেক বড়, আমাদের রাজনীতির সঙ্গে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জামায়াতের হালহকিকত জড়িত। জাতীয় পার্টিসহ দেশবিদেশের গোয়েন্দাদের অর্থ-হুমকিধমকিতে লম্ফঝম্ফকারী ছোট ছোট রাজনৈতিক দলও ইদানীংকালে অতিমাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কিন্তু সবার ওপরে এখন জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সমন্বয়কদের মতিগতি-কিংস পার্টির গঠন-আগমন ও পরিচালনা নিয়ে নানা রকম তর্কবিতর্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তেজনা, দিল্লি-ঢাকার শীতল সম্পর্ক এবং দুই দেশের জনগণ মিডিয়া-আমলাদের মধ্যকার অস্থিরতা।
খাদের কিনারে রাজনীতি! কোথায় যাচ্ছে দেশ!উল্লিখিত সমস্যা ছাড়াও মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মির বিজয়, সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের পতনজনিত সমস্যাও বাংলাদেশের রাজনীতির হিসাবকে জটিল করে দিয়েছে। আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় এবং হাল আমলে দেশের অভ্যন্তরে চীন ও পাকিস্তানের অতিগুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা এবং প্রো-ইন্ডিয়ান সবকিছুই ব্যাক ফুটেজে চলে যাওয়ার মাধ্যমে অর্থনীতি-কূটনীতি এবং রাজনীতিতে তিন ধরনের সমস্যা তৈরি করে ফেলেছে। সমস্যাগুলো ততটা জটিল-কুটিল এবং মহামারি রূপে যেভাবে ক্রমশ বাড়ছে, তাতে করে কেউ চাইলেই সমস্যা থেকে যেমন নিজেকে দূরে রাখতে পারবে না, তদ্রƒপ কোনো মানব-মহামানব কিংবা অতিমানবের সাক্ষ্যও এসব সমস্যা রাতারাতি দূর করা সম্ভব নয়। ফলে অন্তহীন সমস্যার জালে বন্দি হয়ে সমস্যার স্রোতে আমরা সবাই মিলে সমস্যার সাগরে পতিত হওয়ার জন্য দুরন্ত বেগে বয়ে চলেছি।
বাংলাদেশের রাজনীতিকে স্থবির করে দিয়েছে দেশের অর্থনীতি। এখন যারা সরকার চালাচ্ছেন, তাঁরা উত্তরাধিকার সূত্রে যে অর্থনীতি পেয়েছেন, তা রাতারাতি ভালো হওয়ার নয়। অধিকন্তু সামষ্টিক অর্থনীতি সম্পর্কে অনভিজ্ঞতা-রাষ্ট্রপরিচালনার অনভিজ্ঞতা এবং নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডার অস্পষ্টতার কারণে অর্থব্যবস্থার মতো স্পর্শকাতর সেক্টরে স্থিতিশীলতার পরিবর্তে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে। অর্থনীতির সব সূচক নিম্নমুখী এবং একটি সূচকের সঙ্গে অন্য সূচকগুলোর সংঘাত শুরু হয়েছে। গত কয়েক মাসে পর্যাপ্ত রেমিট্যান্স এসেছে। এসব অর্থের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রা খরচ করতে হচ্ছে। সরকারের আয় রোজগার না বাড়ার কারণে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে স্থানীয় মুদ্রা সরবরাহ বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। টাকা ছাপিয়ে বেতন-ভাতা ভর্তুকি এবং খয়রাতি সাহায্য দিতে গিয়ে মূলস্ফীতি যে কোন পর্যায়ে গিয়েছে, তা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা আহাজারি-অস্থিরতা দেখলেই অনুমান করা যায়।
করোনাকাল থেকেই জ্যামিতিক হারে শিল্প উৎপাদন কমেছে। কর্মসংস্থান কমতে কমতে বেকারত্বের হার আশঙ্কাজনক অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে। হাজার হাজার শিল্পকারখানা-ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দোকানপাট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বন্ধ হওয়ার পর্যায়ে রয়েছে লাখ লাখ প্রতিষ্ঠান। দেশের ব্যাংক-বিমার বিরাট অংশকে রীতিমতো আইসিইউতে রেখে কোনো মতে শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আইসিইউ সাপোর্ট তুলে নিলে পুরো আর্থিক খাত যেভাবে ধপাস করে পড়ে যাবে, তা হয়তো দেউলিয়াত্বের সব অতীত রেকর্ড ভেঙে ফেলবে। এহেন অবস্থায় নতুন কোনো দেশীয় বা বিদেশি বিনিয়োগ নেই- উল্টো গার্মেন্ট সেক্টরে একের পর এক অরাজকতা মানুষের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। আমদানি বাণিজ্য মুখ থুবড়ে পড়েছে- সরকার চেষ্টা করেও আমদানি বাড়াতে পারছে না। কারণ ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় পণ্য আমদানি কিংবা স্থানীয় পর্যায়ে পণ্য উৎপাদনঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
আর্থিক খাতের গত তিন মাসের টাটকা খবর হলো- কয়েক হাজার অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়েছে অথবা শূন্য হয়ে গিয়েছে। এসব অ্যাকাউন্ট আওয়ামী লীগের কারও নয়। এসব অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হতো- অথবা কোটি টাকার বেশি স্থিতি থাকত। দেশের অর্থনৈতিক মন্দার কারণে কয়েক হাজার কোটিপতি লোকচক্ষুর অন্তরালে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। মন্দ ঋণ বা খেলাপি ঋণ নিয়ে হররোজ দুঃসংবাদ আসছে। প্রায় সব ব্যাংক নতুন ঋণ বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনীর ব্যাংকগুলো থেকে যেসব ব্যক্তিগত ঋণ প্রদান হতো তা-ও গত কয়েক মাসে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। অর্থনীতির উল্লিখিত বেহাল মানুষের মনমানসিকতা এবং চিন্তার জগতে নিদারুণ অস্থিরতা তৈরি করেছে। ফলে কাউকে সম্মান করা- কারও অনুগত থাকা- কারও প্রতি আস্থা রাখার মতো অতি জরুরি সামাজিক গুণাবলিগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অনাস্থা, সন্দেহ-অবিশ্বাস যেভাবে বেড়েছে তাতে করে ব্যক্তিগত পারিবারিক ও সামাজিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্কগুলো ভেঙে যাচ্ছে। এসব কারণে আওয়ামী লীগবিহীন রাজনীতিতে জামায়াত-বিএনপির সম্পর্ক আর আগের মতো নেই। আওয়ামী লীগের অনেক দোসরকে অনেকে কোলে তুলে নিতে গিয়ে নিজের বহু দিনের বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন লোকজনকে কোরবানি দিয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলো দলের বাইরে যেমন সন্দেহ-অবিশ্বাস-অনাস্থার কারণে দৌড়ঝাঁপ করছে। তদ্রƒপ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেদের মধ্যেও নতুন দ্বন্দ্ব-ফ্যাসাদ আরম্ভ করে দিয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ আমি আওয়ামী লীগ-বিএনপি এবং জামায়াতের অভ্যন্তরীণ অথচ প্রকাশ্যে কিছু দ্বন্দ্ব-ফ্যাসাদের কথা বলব যা পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে হয়েছে এবং এসব সমস্যা দলগুলোর সর্বনাশ ঘটাচ্ছে যা কি না, রাজনীতিকে খাদের কিনারে নিয়ে যাচ্ছে। শুরুতেই আওয়ামী লীগের কথা বলি, ২০২৪ সালের পট পরিবর্তনের পর দলের সভাপতির সব ক্রোধ গিয়ে পড়েছে তাঁর পোষ্য আমলা-কামলার প্রতি। তিনি মনে করছেন, যেভাবে তিনি দলবাজ আমলা-কামলা তৈরি করেছিলেন এবং ওসব দলবাজের বিত্ত-বিলাস-ভোজন-বিনোদনের জন্য অকাতরে রাষ্ট্রীয় কোষাগার উজাড় করে দিয়েছিলেন শেষ পর্যন্ত তার সঙ্গে বেইমানি করেছে। দ্বিতীয়ত আমলাদের ওপর নির্ভর করার জন্য তিনি নিজ হাতে তাঁর দলের সব রাজনৈতিক নেতৃত্বকে অবদমিত, নির্বিষ, অথর্ব, অযোগ্য ও অকার্যকর করে ফেলেছিলেন। ফলে তাঁর চলমান বিপদে সাহায্য করার মতো দেশবিদেশে একজন নেতাকে খুঁজে পাচ্ছেন না। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তিনি অজপাড়াগাঁয়ের প্রখ্যাত ছাত্রলীগকর্মী কিংবা লন্ডন-আমেকিরায় বসবাসরত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে সান্ত্বনা লাভের চেষ্টা করে চলেছেন।
শেখ হাসিনার মতো প্রায় একইভাবে বেগম খালেদা জিয়াও ২০০৬ সালে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পর নজিরবিহীনভাবে দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন। পরে লন্ডনে বসে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও দলের তৃণমূলের সঙ্গে দিনের পর দিন ফোন, স্কাইপি, হোয়াটসঅ্যাপ প্রযুক্তির সাহায্যে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। এসব নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথা বলা যাবে। কিন্তু আজকের আলোচনায় ওদিকে না গিয়ে ঘটমান বর্তমান এবং বিএনপির অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়ে কিছু বলি।
বিএনপিতে বেগম জিয়ার প্রতি অনুগত ও বিশ্বস্ত প্রবীণ নেতারা নিজেদের গুটিয়ে রেখেছিলেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁরা বেশ সক্রিয় হয়েছেন, যা কিনা অনেকের মনোবেদনা ও চোখের বেদনার কারণ হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক অঙ্গনে কোনো বন্ধু বা কাছের মানুষ আছে বলে আমরা জানি না। বেশির ভাগ কেন্দ্রীয় নেতা পদপদবি রক্ষার জন্য অনেক বিষয়ে চুপ থাকেন কিংবা অনেক বিষয়ে কথা বলতে বাধ্য হন। তাঁরা নিজের বুদ্ধি-বিবেক খাটিয়ে চমকপ্রদ কোনো কৌশল সেই ২০০৬ থেকে আজ অবধি আবিষ্কার করেছেন, তা যেমন দৃশ্যমান নয়, তেমনি দলের জন্য অকাতরে পকেটে হাত দিয়ে খরচ করেছেন, এমন মহান ব্যক্তির নাম না জানলেও, কমিটি বিক্রির বদনাম দলটির বহু নেতার বিরুদ্ধে রয়েছে। ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে না। উল্টো ক্ষমতায় গেলে কে কী হবেন, এসব নিয়ে অলিগলিতে মুখরোচক কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে।
বিএনপির সম্মেলন, মহাসচিব পদ, তারেক রহমানের দেশে ফেরা এবং বেগম জিয়ার বিদেশ গমন নিয়ে দলের মধ্যে হররোজ নানামুখী কথাবার্তা হয়। দলবাজ আমলাদের বাড়াবাড়ি, সিবিএ নেতাদের দখলবাজি, পরিবহন সেক্টর, ঠিকাদারি ব্যবসায় আধিপত্যসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্রয়প্রশ্রয় দেওয়া অথবা আওয়ামী লীগের লোকজনের সহায়সম্পত্তি ব্যবসাপাতি এবং চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও অবৈধ আয়ের উৎসগুলো কে বা কারা দখল করল, কারা পেল, কারা পেল না, এসব নিয়ে দীর্ঘদিনের মজলুম দলের মজলুম নেতা-কর্মীরা যা করছে, তা রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত।
উল্লিখিত কারণে বিএনপির শীর্ষনেতাদের মধ্যে আগের মতো ভাব নেই। আবার প্রকাশ্য বিরোধও নেই, যা কি না, একটি দলের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ। সবাই কেবল আজকের দিন নিয়ে ভাবছে এবং নগদ নারায়ণের হিসাব করছে। সাধ্যমতো প্রক্সি দিচ্ছে এবং পদপদবি চলে যায় এমন কথা ও কাজ থেকে কৌশলে নিজেদের বিরত রেখে আয়-রোজগারে মনোযোগী হয়ে পড়ছে। ফলে রাজনৈতিক দলের চিরাচরিত কোলাহলের পরিবর্তে সর্বত্র কেমন যেন খাঁ খাঁ পরিবেশ বিরাজ করছে বিএনপির অফিসগুলোতে।
আওয়ামী লীগ-বিএনপির মতো জামায়াতও বর্তমান সময়ে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছে। জামায়াত গতানুগতিক রাজনীতি করে না। ফলে তাদের বিরোধ-বিপত্তি প্রকাশ্যে আসে না। কিন্তু তারপরও জামায়াতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বিধায় ওই দলটি নিয়েও খোলামেলা-আলোচনা করা উচিত। আপনি যদি জামায়াতের বর্তমান আমিরের কথাবার্তা এবং তৎপরতা লক্ষ করেন তবে আপনার মনে হবে- জামায়াত ইতিহাসের সেরা সময় পার করছে। কিন্তু জামায়াতের অভ্যন্তরে এমন কিছু হচ্ছে, যা কোনো অংশে আওয়ামী লীগ-বিএনপির তুলনায় কম নয়।
অধ্যাপক গোলাম আযমের জমানায় অর্থাৎ যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হওয়ার আগে জামায়াতের ব্যবসাবাণিজ্য, ব্যাংক-বিমা অর্থাৎ অর্থব্যবস্থা নিয়ে স্পষ্টতই দুটো গ্রুপ ছিল। একদিকে প্রয়াত মীর কাসেম অন্যদিকে আবু জাহের। রাজনীতিতে সবচেয়ে প্রগতিশীল ছিলেন কামরুজ্জামান। আলী আহসান মুজাহিদ, কাদের মোল্লা প্রমুখের সাংগঠনিক ক্ষমতা এবং দলের ওপর প্রভাব ছিল অপরিসীম, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জনপ্রিয়তা, এটিএম আজাহারের দক্ষতা, প্রয়াত মকবুল আহমাদের প্রজ্ঞার চমক ২০১২ সালে থমকে যায়। ২০১২ সাল পর্যন্ত অধ্যাপক গোলাম আযমের পরিবার, মতিউর রহমান নিজামীর পরিবার এবং মীর কাসেমের পরিবারের লোকজন জামায়াতের সব বিষয়ে অত্যন্ত প্রভাব-প্রতিপত্তির অধিকারী ছিলেন। তাঁরা জামায়াতের অভ্যন্তরে আওয়ামী লীগ-বিএনপির আদলে একটি এলিটতন্ত্র এবং পরিবারতন্ত্র গড়ে তুলেছিলেন।
২০১৪ সাল থেকে দলীয় এলিটতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক এলিটতন্ত্র ঝুঁকির মধ্যে পড়ে এবং ২০১৯ সালের পর তাঁরা পর্দার আড়ালে চলে যেতে বাধ্য হন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বর্তমান আমিরের নেতৃত্বে জামায়াতের বর্তমান কাঠামোটি দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু শেখ হাসিনার পতনের পর জামায়াতের সেই অভিজাততন্ত্র আবার ফিরে এসেছে এবং দলটির অভ্যন্তরে বর্তমান নেতৃত্বের ওপর কী চাল সৃষ্টি করেছে, তা কেবল জামায়াতঘনিষ্ঠরাই বলতে পারবেন।
আমরা আজকের আলোচনার শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। উপসংহারে শুধু এ কথাই বলতে চাই, বাংলাদেশের সার্বিক রাজনীতি ইতিহাসের সবচেয়ে জটিল-কুটিল-ভয়ংকর সময় পার করছে। বর্তমানে যা কিছু হচ্ছে তার কোনোটিই আপনি রাজনৈতিক ব্যাকরণের মধ্যে ফেলতে পারবেন না। কোনো রাজনৈতিক সূত্র মন্ত্র-ঝাড়-ফুঁক এখন কাজ করছে না। অনিশ্চয়তার ঘোর অমানিশা, অরাজকতার কুয়াশা এবং বিশৃঙ্খলার উত্তপ্ত পরিস্থিতি মানুষের চিন্তা-অনুভূতি-ভাবাবেগকে নষ্ট করে দিয়েছে। ফলে গভীর অন্ধকারের মধ্যে পড়ে কারও মধ্যে যদি বিষধর সাপের আতঙ্ক দেখা দেয় এবং সেই অবস্থায় প্রিয়তমার হাত যদি শরীর স্পর্শ করে তবে মানুষ যেভাবে আর্তচিৎকার শুরু করে দেয়, ঠিক সেই অবস্থার দিকে আমরা ধেয়ে চলেছি।
♦ লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক