বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: ভারতের হরিয়ানার একটি খাল থেকে মডেল দিব্যা পাহুজারের গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। খুনের ১১ দিন পর এই মডেলের মরদেহ উদ্ধার করা হলো।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২ জানুয়ারি গুরুগ্রামের একটি হোটেলে খুন করা হয় দিব্যাকে। পরে মরদেহ হরিয়ানার একটি খালে ফেলে দেয়া হয়। এ ঘটনায় বলরাজ গিল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তাকে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জবানবন্দিতে জানা যায়, দিব্যার মরদেহ লুকিয়ে ফেলার জন্য বলরাজকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। খুন করা পর মরদেহ হরিয়ানার টোহনা খালে ফেলে দেন তিনি।
পুলিশের তদন্তকারী এক কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারের পর বলরাজ গিল জানিয়েছিলেন দিব্যার মরদেহ তিনি গুরুগ্রাম থেকে ২৭০ কিলোমিটার দূরে পঞ্জাবের পটীয়লার একটি খালে ফেলে দিয়ে এসেছেন। তার কথার ওপর ভিত্তি করে পুলিশের একটি দল খালে তল্লাশি চালায়। কিন্তু মরদেহ না পেয়ে বলরাজকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর হরিয়ানার খাল থেকে মডেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
দিব্যার মরদেহ পরিবারের সদস্যদের দিয়ে শনাক্ত করানো হয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।
প্রসঙ্গত, নিউ দিল্লির গুরুগ্রামের সিটি পয়েন্ট হোটেলে খুন হন ২৭ বছর বয়সী মডেল মডেল দিব্যা পাহুজা। পাঞ্জাবি এই মডেলকে খুন করেছেন হোটেল মালিক অভিজিৎ সিং। খুনের পর দিব্যার মরদেহ পাচারের জন্য এক সহযোগীকে ১০ লাখ টাকা দেন ওই হোটেল মালিক। এই ঘটনায় ওই হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) হোটেলের ১১ নম্বর রুমের দিকে যাচ্ছেন মালিক অভিজিৎ। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন একজন পুরুষ ও মহিলা। সেই রুমেই খুন করা হয় দিব্যাকে। পরে তার মরদেহ টেনে-হিঁচড়ে বের করা হয় হোটেল থেকে। তোলা হয় একটি নীল রঙের বিএমডব্লিউ গাড়িতে।
সিসিটিভি ফুটেজে পুরো ঘটনাই ধরা পড়ে। অভিযোগ ওঠে, দিব্যাকে খুন করে তার দেহ সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল। এরপর ঘটনার তদন্তে নামে স্থানীয় পুলিশ। পাঞ্জাবের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে তারা।
সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন জানায়, দিব্যাকে খুন করে তার দেহ পাচার করার জন্য সহযোগীকে প্রায় ১০ লাখ টাকা দেন অভিজিৎ। এরপর ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। পাঞ্জাবের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্ত অভিজিৎ ও দুই সন্দেহভাজন প্রকাশ এবং ইন্দ্ররাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কুখ্যাত গ্যাংস্টার সন্দীপ গাডোলির সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন দিব্যা। ২০১৬ সালে মুম্বইয়ে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় সন্দীপের। তারপরই দিব্যার মা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান সন্দীপের ভাই-বোন ও অভিজিৎ সিংয়ের নামে। তার মেয়েকে নাকি খুন করার চেষ্টা করছেন তারা।
সেসময় থেকে নাকি দিব্যার ওপর রাগ অভিজিতের। ঘটনার পর বেশ কয়েক বছর কেটে গেছে। সন্দীপের মৃত্যুর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিলেন এই মডেল। গত বছরই মুম্বাই আদালত থেকে জামিন পান দিব্যা। একবছর পরেই অভিজিতের হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন তিনি।