গাইবান্ধা থেকে মোঃ আবু জাফর মন্ডল : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ভূমিদস্যুর আগুনে পুড়ে ছাই গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালপল্লি। ঘটনার বিবরনে প্রকাশ থাকে যে,গোবিন্দগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক সাঁওতাল নারীকে মারধর ও বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার সকালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের রাজাবিরাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রতিবাদে রোববার গাইবান্ধা জেলা শহরে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শহরের ডিবি রোডে গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (গানাসাস) সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল ‘আদিবাসী’ সাঁওতাল ও বাঙালীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহন করে। সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, আদিবাসী-বাঙালী সংহতি পরিষদ, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ, এএলআরডি এবং জনউদ্যোগ গাইবান্ধার আয়োজন এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ডা. ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন, পরিবেশ আন্দোলন সভাপতি ওয়াজিউর রহমান রাফেল, আদিবাসী-বাঙালী সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবীর, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিকতু প্রসাদ, ভূক্তভোগী শ্যামবালা, ব্রিটিশ সরেন, সাঁওতাল নেত্রী সুচিত্রা মুরমু তৃষ্ণা, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের নেতা গোলাম রব্বানী মুসা, যুব নেতা সুজন প্রসাদ, অ্যাড. কুশলাশীষ চক্রবর্তী সাগর, অ্যাড. মোহাম্মদ আলী, অ্যাড. ফারুক কবির, কাজী আব্দুল খালেক, নারী নেত্রী নাজমা বেগম, সাবেক কাউন্সিলর সাজেদা পারভিন রুনু, সুজন রবিদাস, ময়নুল ইসলাম প্রমুখ।
আহত ফিলোমিনা হাসদার ছেলে ব্রিটিশ সরেন অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার সকালে তাদের পৈত্রিক জমিতে চেয়ারম্যান মাটি ভরাট শুরু করলে বাধা দিতে গেলে তার খালাতো ভাইকে মারধর করা হয়। প্রতিবাদ করতে গেলে তার মা ফিলোমিনা হাসদাকে লাঞ্ছিত করা হয় এবং পরে রাতে তাদের বাড়িতে হামলা ও আগুন দেওয়া হয়।
সামবেশে বক্তারা বলেন, রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যান ও তার লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তারা সাঁওতাল নারী ফিলোমিনা হাসদাকে (৫৫) মারধর এবং তার বাড়িতে আগুন দেয়। মারধরের শিকার ওই নারী বর্তমানে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় শনিবার রাতে চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। বক্তারা এজাহারে অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি করেন। বক্তারা আরও বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে সাঁওতালদের প্রায় ২৫০ বিঘা জমি স্থানীয় বাঙালিরা নানাভাবে দখলে নিয়েছেন। সেই কারণে সেখান থেকে অনেক সাঁওতাল পরিবার অন্য জায়গায় চলে গেছেন। এই সুযোগে চেয়ারম্যান জমি দখলের পাঁয়তারা করছেন। তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন এবং সাঁওতালদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।