আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি এই হুঁশিয়ারি দেয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য সাধারণ ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ পড়ে শোনান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর সময়ের দাবি। এটা আন্দোলনের বিষয় নয়, অনুধাবনের বিষয়, উপলব্ধির বিষয়। এই উপলব্ধির বিষয়টি নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছি। আমাদের আন্দোলনের কারণেই মহামান্য রাষ্ট্রপতি ২০১২ সালের ৩১ শে জানুয়ারি মহান সংসদে ৭১ বিধিতে আলোচনার সময় বয়স ৩৫ বছরের কথা উল্লেখ করেন। স্বাধীনতার পর মহান জাতীয় সংসদে বয়সের বিষয়টি প্রায় ১০০ বারের মতো প্রস্তাব পেশ করা হয়। চার বার পয়েন্ট অব অর্ডার প্রস্তাব পেশ করা হয়। দেশের সব রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনীয় ইশতেহারে এই কথা উল্লেখ করে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে অঙ্গীকার করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় বর্তমান সরকার ৩ বছর অতিক্রম করার পরেও ছাত্রদের দেওয়া কথা, অঙ্গীকার এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করেনি।
তিনি বলেন, গড় আয়ু যখন ৪৫ ছিল তখন চাকরিতে প্রবেশের বষয়স ২৭ ছিল, গড় আয়ু যখন ৫০ পার হল, তখন ৩০ করা হলো। বর্তমানে আমাদের গড় আয়ু ৭২.২ বছর। গড় আয়ু বাড়ানোর কারণে চাকরিতে অবসরের সীমা ৫৭-৫৯ বছর করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় গড় আয়ু বাড়ানোর কারণে এখন পর্যন্ত চাকরিতে প্রবেশের সীমা বাড়ানো হয়নি।
জুবায়ের বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ বছর। এই গণ্ডি, দেওয়াল, সীমানা প্রাচীর অবরুদ্ধ করে রেখেছে বাংলার লক্ষ কোটি ছাত্র সমাজকে। তারা আজ নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত, ছাত্রসমাজ আজ দিশেহারা কর্মহীনতার মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটপট করছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে করোনা মহামারির কারণে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৭ কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাখ লাখ শিক্ষার্থী প্রায় আড়াই বছরের সেশনজটে পড়েছে, এখনও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা প্রায় অনিশ্চিত। নন পিএসসির ক্ষেত্রে প্রজ্ঞাপনের শুরুর বয়স ১৮ বছর, ১৮ বছরে কখনও ৪ বছর মেয়াদি অনার্স শেষ হয় না, ২ বছর মেয়াদি ডিগ্রিও এখন নেই, এই অকার্যকর আইনটি এখনও বাতিল করা হয়নি। এমতাবস্থায় ছাত্রদের এই ঘাটতি পুষিয়ে দিতে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করা ছাড়া কোনো বিকল্প পথ নেই।
জুবায়ের বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে চাকরির বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। এই ইস্যুটি ব্যাপক আলোচিত, সর্বমহলে সমাদৃত এবং বর্তমানে করোনাভাইরাস মহামারীর প্রেক্ষাপটে এটি গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। এই দাবি বাস্তবায়নে সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত না জানালে ছাত্র সমাজ কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ ছাত্র পরিষদের মুখপাত্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন, সংগঠনের সমন্বয়ক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুলতানা আক্তার, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মো. নাসিম উপস্থিত ছিলেন।