বঙ্গনিউজবিডি রিপোর্ট : দেশের বরেণ্য কথাসাহিত্যিক বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন-কে গতকাল ২ সেপ্টেম্বর এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর আশুলিয়াস্থ ক্যাম্পাসে একটি সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজক বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা দাবিদার দেশের চিহ্নিত রাজাকার যুদ্ধাপরাধী মাওলানা আবুল হাসান মোহাম্মদ সাদেক। জাল সনদ বিক্রি, অর্থ পাচার, বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় থেকে নিজ এবং পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল অর্থ বৈভব অর্জন, নারী কেলেংকারী (তার ২ জন অবৈধ সন্তান রয়েছে) ইত্যাদি বহু অপরাধের সাথে জড়িত এই মাওলানা সাদেক। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সে, তার বাবা মাওলানা খালেক, সহোদর ভাই ইঞ্জিঃ ফারুক সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। স্থানীয় মুক্তিকামী জনগনের উপর সেসময়কারের তাদেরকৃত অত্যাচার নির্যাতনের কথা এখনো মানুষ ভুলতে পারে নাই। স্বাধীনতা বিরোধী তাদের কর্মকান্ডের বিস্তারিত বিবরণ পরবর্তীতে দৈনিক জনকণ্ঠ, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক মানবজমিন, সাত দিনের পত্রিকা ‘সাপ্তাহিক’-সহ বহু পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার নামে বর্তমানে চলমান অপরাধ সমূহের বিস্তারিত বিবরণও বহু প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় প্রচারিত হয়ে আসছে। এসবের উপর তদন্তও কম হচ্ছে না। কিন্তু কোন এক ভৌতিক কারণে মাওলানা সাদেক থেকে যাচ্ছে বিচারিক শাস্তির বাইরে। জনশ্রুতি রয়েছে যে, নরসিংদী আওয়ামী লীগের সভাপতি আফজাল হোসেনের কাছ থেকে সে ৩০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের’ সনদ কিনেছে, ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে ‘ক্লিন’ সার্টিফিকেট কিনেছে, ৯ কোটি টাকার বিনিময়ে যুদ্ধাপরাধের অপবাদ থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে।
অনার্সে ৩য় শ্রেণি অর্জনকারী মাওলানা সাদেকের কোন পিএইচডি ডিগ্রি নাই। তারপরও সে নামের সঙ্গে লিখে আসছে প্রসেসর ড.। কিছুদিন পূর্বে হঠাৎ করে নামের সাথে যুক্ত করা শুরু করলো প্রফেসর ইমেরিটাস, যা পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নির্দেশে বাতিল হয়ে যায়। বিভিন্ন এঙ্গেলে ছবি তুলে হঠাৎ কবি হয়ে যাওয়া মাওলানা সাদেকের অপরাধের কোন শেষ নাই। এহেন একজন ব্যক্তির নিমন্ত্রণ কিভাবে বরেণ্য কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন গ্রহণ করলেন তা এক বিষ্ময়কর বিষয়। সাংবাদিকবৃন্দ এতদবিষয়ে তাঁর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমিতো এখন অনুষ্ঠানে পৌঁছে গিয়েছি। একটু আগে জানলে হয়তো আসতাম না। মাওলানা সাদেকের অপকর্মের বিষয়ে সাংবাদিকবৃন্দ বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও পি এস টু সভাপতি জাহিদকে বিস্তারিত জানিয়েছে। তাঁরা বলেছেন, এতদবিষয়ে আরো বিস্তারিত জানবেন। তবে স্বাধীনতার সপক্ষের চিন্তাবিদগন মনে করছেন, কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে আয়োজক সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেশুনে তবে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।