বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের ছেলে প্রতীক হাসানের উপাচার্য ভবনে দাঁড়িয়ে মদপানের ছবি ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে ক্যাম্পাসজুড়ে।
গত কয়েকদিন আগে সাবেক উপাচার্যের ছেলের মদপানের একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ক্যাম্পাসেই পোস্টার আকারে সাঁটিয়ে দেয় একটি পক্ষ।
কয়েকদিন আগেই মদপানের একটি ছবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র এলাকায় পোস্টার আকারে লাগানো অবস্থায় দেখা যায়। ‘জাহাঙ্গীরনগর পরিবারের’ ব্যানারে এ পোস্টারে সাবেক উপাচার্য ফারজানা ইসলামের স্বামী ও পুত্রকে দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে তাদের বিচারও চাওয়া হয়।
এর আগে জাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও জাবি শাখা ছাত্রলীগের বিগত কমিটির সহ-সভাপতি হামজা রহমান অন্তর তার ফেসবুক পেজে ছবিটি শেয়ার দিয়ে লেখেন, ‘এই পরিবারটা (ভিসি ফারজানা) এতই বেপরোয়া ও দানব হয়েছে যে, জাতির পিতা ও নেত্রীর ছবির সামনেও এসব (মদপান) করার সাহস পায়!’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির একজন সদস্য জানান, উপাচার্যের স্বামী এক সরবরাহকারী থেকে এক চালানে চার বোতল বিদেশি মদ গ্রহণ করেন। এ ঘটনায় বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সহকারী প্রক্টরের ভাষ্য, সাভারের নবীনগর সেনা একটি শপিং কমপ্লেক্সে একটি দোকান থেকে জাবির পরিসংখ্যান বিভাগের ও শহীদ সালাম-বরকত হলের আবাসিক এক শিক্ষার্থী ভূয়া পরিচয় দিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকার কেনাকাটা করে। বিল পরিশোধের সময় সে ভূয়া পরিচয় দিলে তার কথাবার্তায় অসংলগ্ন থাকায় শেষমেষ ধরা পড়ে যায়। পরে শপিং কমপ্লেক্সের সিকিউরিটি রুমে তাকে বেধড়ক মারধর করার পরে ক্যাম্পাসে প্রক্টরিয়াল বডিকে অবহিত করা হয়। ঘটনাস্থলে প্রক্টরিয়াল টিমের উপস্থিতির কিছুক্ষণ পরে সেখানে উপস্থিত হন ওই প্রতারক শিক্ষার্থীর দুলাভাই। প্রক্টরিয়াল টিমের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সময়ই তার দুলাভাই বলে ‘ও! আপনারা জাবি ক্যাম্পাসের? গতকালই তো আপনাদের ভিসির স্বামীর কাছে ৪ বোতল বিদেশি মদ সাপ্লাই দিয়ে আসলাম।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ক্যাম্পাসের কোনো শিক্ষক যদি উচ্চ শিক্ষায় বিদেশ যেতে উপাচার্য ফারজানা ইসলামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে উপাচার্যের স্বামী তাকে বিদেশি ব্রান্ডের মদ আনার জন্য বলতেন। উপাচার্যের ছেলে ও স্বামীর মদ সরবরাহকের তালিকায় শিক্ষকের নামও এসেছে।
উপাচার্যের বাসভবনে দায়িত্বপালনকারী একটি সূত্র বলছে, অফিসে বসে সাবেক ভিসির ছেলের মদ পানের ছবি প্রকাশ্যে আসার পরে ভিসির বাসায় যে কোনো সময় তল্লাশি চালানো হতে পারে এমন ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে রাতের আধারে গাড়িতে করে বোতলগুলো সরানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মারফতে ছবিটি আমিও দেখেছি। তবে এটি সাবেক ভিসি ও তার পরিবারের পারিবারিক বিষয়। তাই এ বিষয়ে আমি অন্য কোনো মন্তব্য করবো না। সাবেক ভিসির স্বামী ও ছেলের কাছে কারা মদ সরবরাহ করে- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
এ সব বিষয়ে জানতে সাবেক ভিসি ফারজানা ইসলাম ও তার ছেলে প্রতিক হাসানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে মন্তব্য পাওয়া যায়নি সাবেক ভিসির স্বামী আখতার হোসেনেরও।