বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : যারা জিতবে, সিরিজ হবে তাদেরই। এমন ম্যাচে উত্তেজনায় ভরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াই উপহার দিয়েছে দুই দল। তবে শেষ হাসি হেসেছে স্বাগতিকরাই। বাংলাদেশকে ১০ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো টাইগারদের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজ জয়ের রেকর্ড গড়েছে জিম্বাবুয়ে।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৬ রান সংগ্রহ করেছিল জিম্বাবুয়ে। জবাবে ৮ উইকেটে ১৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ।
শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। প্রথম বলে এক রান নেন আফিফ। পরের বলে হাসান মাহমুদ আউট হন। বাকি থাকা ৪ বলে প্রয়োজনীয় রান এনে দিতে পারেননি আফিফ। শেষ বল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাই আনন্দে ভাসে স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের হয়ে রান তাড়া করতে নামেন এ ম্যাচে অভিষিক্ত পারভেজ হোসেন ইমন ও লিটন দাস। দুজনের কেউই দলকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি। আউট হওয়ার আগে লিটন ১৩ ও ইমন ২ রান করেন। এছাড়া সাজঘরে ফেরার আগে বিজয় ১৪ ও শান্ত ১৬ রান করেন।
৬০ রানে চার উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন। ২৭ রানে রিয়াদ ফিরলে ভাঙে দুজনের ২৯ রানের জুটি। পরের বলে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ফিরলে দল চাপে পড়ে যায়। এমতাবস্থায় ম্যাচটি জিম্বাবুয়ের দিকেই প্রায় হেলে পড়ে।
পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন আফিফ ও মাহেদী। দুজনের ৩৪ রানের জুটিতে ম্যাচে টিকে ছিল বাংলাদেশ। তবে সেটা যথেষ্ট ছিল না। দলের হয়ে শেষ চেষ্টা করা আফিফ অপরাজিত থাকেন ৩৯ রানে।
জিম্বাবুয়ের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের ম্যাচে বল হাতে ৩ উইকেট শিকার করেছেন ভিক্টর নিয়ুচি। এছাড়া ব্র্যাড ইভান্স দুটি এবং ওয়েসলে মাধেভেরে, শন উইলিয়ামস ও লুক জঙ্গে একতি করে উইকেট নেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। সোহান আহত হয়ে সিরিজ থেকে ছিটকে পড়ায় এ ম্যাচে তার জায়গায় বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করেন আগের ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
দুই ওপেনার রেগিস চাকাভা ও আরভিনের ব্যাটে জিম্বাবুয়ের শুরুটা হয় দারুণ। প্রথম তিন ওভারেই তারা স্কোরবোর্ডে ২৯ রান যোগ করেন। এর মাঝে সৈকতের করা তৃতীয় ওভারে আসে ১৫ রান।
চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে আসেন নাসুম আহমেদ। নিজের করা প্রথম বলেই চাকাভাকে আফিফ হোসেনের তালুবন্দী করেন তিনি। মাত্র ১০ বলে ১৭ রান করেন চাকাভা। ষষ্ঠ ওভারে জোড়া আঘাত হানেন মাহেদী হাসান।
ওয়েসলে মাধেভেরেকে ব্যক্তিগত ৫ রানে বোল্ড করার পরের বলেই বিপদজনক সিকান্দার রাজাকে সাজঘরে ফেরান মাহেদী। হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেলেও অবশ্য সেটা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। তবে স্বাগতিকদের একদম ব্যাকফুটে ঠেলে দিতে সেটাই ছিল যথেষ্ট।
শন উইলিয়ামসকে ২ রানের বেশি করতে দেননি সৈকত। এরপর বোলিংয়ে এসে নিজের প্রথম ডেলিভারিতেই জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক আরভিনকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন এই ম্যাচে দলে সুযোগ পাওয়া রিয়াদ। আউট হওয়ার আগে তিনি ২৭ বলে ২৪ রান করেন।
১৩ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ৬৭ রান। বলা যায় টাইগারদের বোলিং তোপে ১০০ রানের নিচে অল আউট হওয়ার শঙ্কায় ছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু এ সময় পাল্টা আক্রমন শুরু করেন বার্ল ও লুক জঙ্গে। প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন তারা।
ইনিংসের পঞ্চদশ ও নিজের করা স্বিতীয় ওভারটি ভুলে যেতে চাইবেন নাসুম আহমেদ। কারণ তার এই ওভারেই যে পাঁচটি ছক্কা হাঁকান বার্ল। সেই ওভারে আসে মোট ৩৪ রান।
১৯তম ওভারে ৩৫ রান করা জঙ্গেকে আউট করেন হাসান মাহমুদ। এর মাধ্যমে ভাঙে বার্লের সঙ্গে তার ৩১ বলে ৭৯ রানের বিধ্বংসী জুটি। একই ওভারে সাজঘরে ফেরেন বার্লও। তিনি মাত্র ২৮ বলে করেন ৫৪ রান।
শেষ পর্যন্ত ১৫৬ রান করে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের হয়ে মাহেদী হাসান ও হাসান মাহমুদ দুটি এবং মুস্তাফিজুর রহমান, মোসাদ্দেক, নাসুম আহমেদ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ একটি করে উইকেট শিকার করেন।
আগামী ৫ আগস্ট থেকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে।