বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : আন্দোলনে ‘জয়ী হবো’ উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের আশাহত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেকে বলে, কী ভাই কিছু হবে? এটা যখনই মনে করবেন তখনই বুঝবেন যে, আপনি শেষ। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একটা শ্লোগান দিচ্ছেন না যে, যদি তুমি ভয় পাও তাহলে তুমি শেষ, আর তুমি যদি রুখে দাঁড়াও তুমিই বাংলাদেশ।’
মঙ্গলবার (৮ জুন) বিকেলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি এই সভার আয়োজন করে।
ফখরুল বলেন, ‘একজন মানুষ মরে যায় কখন? সে যখন আশা হারায়। হোপস, এই হোপস নিয়ে আমাদের থাকতে হবে। একটি সত্য আপনাদের মনে রাখতে হবে যে, এই দেশের শতকরা ৯০ জন মানুষ আপনাদের পক্ষে আছে, যেখানেই যাবেন দেখবেন…। একটা কথা আমি বলতে পারি, আমরা জয়ী হবোই। আমাদেরকে সামনের দিকে এগোতে হবে।’
নিজের মোবাইল ফোন দেখিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেক সময় নাই, আমি আপনাদের দেখাতে পারতাম যে, একজন রিকশাওয়ালা কী বলছেন। একজন ঠেলাগাড়ি চালায় তিনি কী বলছেন। গাইবান্ধায় একজন সবজি বিক্রি করেন, তিনি কী বলছেন। এগুলো কোনো কিছু বানানো নয়, তাদের মনের কথাগুলো তারা বলছেন যে, এই সরকার আমাদের কী দেখবে? নিজের দেখেই তো কুল কিনারা পায় না। আমাদের তো দেখে না কেউ।’
‘আজকে হাজার হাজার কোটি টাকার মেগা প্রজেক্ট করতেছেন, মেগা প্রজেক্টে পাঠাচ্ছেন। এই যে মহাখালীতে সাতলাবস্তি পুঁড়ে গেল, তাদের জন্য কোনো প্রজেক্ট তৈরি করে না।’ বলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘উত্তর মহানগরকে আমি অনুরোধ করতে চাই, শুধু পদ-পদবির জন্য দৌঁড়াবেন না। কমিটি হয়ে গেলে হারিয়ে যাবেন না, হারিয়ে যেন আমরা না যাই এবং এবার আমরা যেন চেষ্টাটা করি, সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টাটা করি। বাকী তো উনার হাতে, সব উপরওয়ালার হাতে। আমরা বিশ্বাস করি, সঠিক পথে থাকলে, ঠিক পথে থাকলে বিজয় আমাদের অনিবার্য।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য খণ্ডন করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গণতন্ত্রকে হত্যা করছে কারা? আওয়ামী লীগই গণতন্ত্রকে বারবার হত্যা করছে। যে সংবিধান ১৯৭২ সালে আপনাদের দ্বারা তৈরি, সেই সংবিধানকে কেটে ছিঁড়ে সবকিছু শেষ করে দিয়েছে কে? আওয়ামী লীগ আপনারা। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আপনারা ১৭৩ দিন হরতাল করলেন, লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষকে মারলেন, বুকের উপরে উঠে নাচলেন, সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে কে সরালো? আওয়ামী লীগ, এই শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রী। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিলেন আপনারা।’
ফখরুল বলেন, ‘জনগণ ভোটের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উপায়ে সরকার নির্বাচন করবে-সেই অধিকারই তো এখন নাই। এখন কী হচ্ছে? শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। আমি তাদের আবারও বলছি যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান আবার আনুন। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে, সেই পথ রুদ্ধ করবেন না। তার পরিণতি গোটা বিশ্বের জানা। গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হতে হবে। তা না হলে এর ফল খুব খারাপ।’
দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে ‘বাতিঘর’ উল্লেখ করে তার আদর্শ অনুসরণ করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের পরামর্শ দেন তিনি।
বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলিম নকির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, মহানগর উত্তরের আতিকুল ইসলাম মতিন, জিএম শামসুল হক, এবিএমএ রাজ্জাক প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।