জয় পেলেও ওই সব হোম সিরিজে ব্যর্থ ছিলেন ব্যাটসম্যানরা। অন্যতম বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের মুখেও ছিল একই সুর। সেসময় সাকিব টাইগার ব্যাটসম্যানদের পরামর্শ দিয়েছিলেন শেষ দুইটা সিরিজে (অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড) তাদের পারফরমেন্স ভুলে যেতে।
সে সময় রাজধানীর একটি হোটেলে একটি অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন সাকিব।
তখন সাকিব বলেন, “এই নয়-দশটা ম্যাচ যারা খেলেছে, সবাই অফ ফর্মেই আছে।”
একটু হেসে তিনি আরও বলেন, “কারণ পিচটাই এমন। এমন পিচে কেউ যদি দশ-বারোটা ম্যাচ খেলে তাহলে একটা ব্যাটসম্যানের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। খুবই স্বাভাবিক। এটা কাউন্ট না করি আমরা।”
সাকিবের সেই মন্তব্যই ফের আলোচনায়। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের শুরুতেই বড় হোঁচট খেয়েছে বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে গেছে টাইগাররা। মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতায় ম্যাচটি হেরেছে বাংলাদেশ। এই হারের ফলে এখন বাংলাদেশের জন্য বিশ্বকাপের মূলপর্বে যাওয়া নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে।
বিশ্বকাপের প্রথম পর্বের গ্রুপ ‘বি’তে বাংলাদেশ ফেভারিট হিসেবে থাকলেও স্কটিশদের বিপক্ষে এই হারের কারণে সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাদের বিশ্বকাপে খেলা বড় প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল।
এখন গ্রুপের অপর দুই দল ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে জয়ের বিকল্প কিছু নেই। অথচ স্বাগতিক ওমান গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ পাপুয়া নিউ গিনিকে উড়িয়ে দিয়েছে কোনও উইকেট না হারিয়ে।
পাপুয়া নিউ গিনি প্রথমে ব্যাট করে ১২৯ রান করে। জবাবে কোনও উইকেট না হারিয়ে ১৩১ রান করে হেসেখেলে ম্যাচ জিতে নেয় ওমান। সেই ওমানকে প্রতিপক্ষ হিসেবে খেলতে বাংলাদেশের কি অবস্থা হবে সেটা সময়ই বলে দেবে।
টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে বাংলাদেশ এখন পার করছে সেরা সময়। অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ডকে উড়িয়ে সিরিজ জেতা, র্যাংকিংয়ে সেরা অবস্থান (ষষ্ঠ); সবকিছু মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের যাত্রা হওয়ার কথা ছিল স্বপ্নের মতো। কিন্তু স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হার সেই স্বপ্ন গুড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের।
রবিবার স্কটল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪০ রান তোলে। জবাবে বাংলাদেশ ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৪ রানে থামে।
বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। যদিও স্কটল্যান্ডের শুরুটা একেবারেই ভাল হয়নি। ১২ ওভারের মধ্যে ৫৩ রানে ৬ উইকেট হারায় তারা। তখন মনে হচ্ছিল স্কটল্যান্ড ১০০ রানও করত পারবে না।
সাত নম্বরে নেমে গ্রেভস ২৮ বলে ৪৫ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসে ৪টি চার, ২টি ছয় রয়েছে। তাকে সঙ্গ দেন মার্ক ওয়াট। তিনি ১৭ বলে ২২ রান করেন। সপ্তম উইকেটে দু’জনে ছয় ওভারে ৫১ রান যোগ করেন। অষ্টম উইকেটে গ্রেভস ও জস ডেভি দুই ওভারে ২৭ রান যোগ করেন। এই দুটি জুটিই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের তফাৎ গড়ে দেয়।
রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ কোনও সময়ই রান তোলার গতি বাড়াতে পারেনি। দলের ১৮ রানের মধ্যে লিটন দাস (৭ বলে ৫), সৌম্য সরকার (৫ বলে ৫) ফিরে যান। শাকিব (২৮ বলে ২০), মুশফিকুর রহিম (৩৬ বলে ৩৮), মাহমুদুল্লাহ (২২ বলে ২৩) বড় রান করতে পারেননি। শেষ দিকে মেহেদি (৫ বলে অপরাজিত ১৩) চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পারেননি। মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতায় হেরে যায় বাংলাদেশ।
এই হারের ফলে বাংলাদেশের এখন বিশ্বকাপের মূলপর্বে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কঠিন হয়ে গেল। বাংলাদেশের পরের ম্যাচ ওমানের বিরুদ্ধে ১৯ অক্টোবর (মঙ্গলবার)।