বঙ্গ নিউজ বিডি ডেস্ক: বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছেন, বিগত সময়ে এনআইডি জালিয়াতি করে একই পরিবারের একাধিক টিসিবি কার্ড করা হয়েছিল। এ রকম ৩৭ লাখ দ্বৈত কার্ড বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর ৩৭ লাখ দ্বৈত কার্ড বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে আরও ৩৭ লাখ পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী ওমর বোলাট নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডের কথা বলা হলেও এখন কেন ৬৩ লাখ পরিবারকে স্মার্ট কার্ডের আওতায় পণ্য দেওয়া হচ্ছে?
এ প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা শেখ বশির বলেন, ‘এক কোটি কার্ডের মধ্যে প্রচুর দুর্নীতি ছিল। একই পরিবারে একাধিক কার্ড ছিল। এনআইডি ব্যবহার করে দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে এই কাজটা করেছে। এক কোটির মধ্যে যে ৩৭ লাখ কার্ড নেই, এর মধ্যে একজনও বাদ পড়েনি।’
তিনি বলেন, ‘যারা ছিল, যারা সঠিক প্রাপক, তাদের কাছেই পণ্য পাঠানো হচ্ছে। যারা বেঠিক ছিল, ডুপ্লিকেশন ছিল; তাদেরকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সংখ্যায় একটি পরিবারকেও কমানো হয়নি।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আরও ৩৭ লাখ কার্ড বাড়াতে চাই। ক্রয় এবং বিপণনে স্বচ্ছতা আনার মাধ্যমে যদি এটা এক কোটি থেকেও বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়- আমরা সেটাও করব।’
চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এটা সাময়িক’।
রোজায় দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে সরকারের প্রস্তুতি কেমন, এ প্রশ্নের উত্তরে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘রমজানের নিয়ে আমরা সামগ্রিকভাবেই প্রস্তুত। এই মুহূর্তে চালের বাজার নিয়ে আমরা বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমরা আমদানি উদারীকরণ করেছি।
‘চাল আমদানির ক্ষেত্রে প্রায় ৬৩ শতাংশ শুল্ক ছিল, সেটা আমরা ৩ শতাংশ নামিয়ে এনেছি। এই মুহূর্তে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে কয়েক লাখ টন চাল সরাসরি আমদানি হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে হচ্ছে, পাকিস্তান থেকে হচ্ছে, ভারত থেকে হচ্ছে।’
এখন আমনের ভরা মৌসুম চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এপ্রিল নাগাদ বোরো ধান আসবে। আমরা আশা করি যে, এখন থেকে এপ্রিল অর্থাৎ আগামী তিন মাস বাজারে যে একটা সাময়িক অবস্থা তৈরি হয়েছে, আশা করি ইনশাআল্লাহ সেটা ঠিক হয়ে যাবে।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের জানা মতে- আবহাওয়াগত কারণ, বন্যা, বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে হয়তোবা (চালের দাম বেড়েছে)…। আমাদের নিজস্ব তথ্য-উপাত্ত বলছে, আমাদের চালের কোনো ঘাটতি নেই।
‘আমাদের সরকারি মজুতে কোনো ঘাটতি নেই। তার পরেও প্রস্তুতিমূলক পর্যায়ে আমরা যে ব্যত্যয়টা চালের বাজারে দেখছি, সেটাকে হ্যান্ডল করার জন্য আমদানিকে আরও বেশি উদার করেছি। আমরা আশা করি, আমদানি শুরু হলে যদি কেউ মজুদ করে থাকে অন্যায্যভাবে, এই মজুদটা তারা ছাড়তে বাধ্য হবে এবং বাজার স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসবে।’
শেখ বশির বলেন, ‘টিসিবি দিয়ে যে চাল বিক্রি করা হয়, সেটি আমরা পূর্ণমাত্রায় ব্যবহার করছি। আমরা বাজারে চাল সরবরাহ বাড়িয়েছি।
‘৫০ লাখ পরিবারকে (খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি) যে কম দামে চাল দেওয়া হয়, সেটা শুরু হচ্ছে। টিসিবির স্মার্ট কার্ডধারী ৬৩ লাখ পরিবারকে এ সপ্তাহ থেকেই টিসিবি চাল দেওয়া শুরু করবে,’ বলেন উপদেষ্টা।