বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : ঢাকাকে দখল, দূষণ ও দুষ্ট লোকের কবল থেকে মুক্ত করে সবার বাসযোগ্য একটি আধুনিক নগরীতে রূপান্তরিত করতে হবে বলে জানালেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) রাজধানীর কাফরুল থানায় ইব্রাহিমপুরে এডভেন্টিস্ট ইন্টারন্যাশনাল মিশন স্কুলে স্থানীয় জনগণের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় রাস্তা প্রশস্তকরণ কার্যক্রম পরিদর্শন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর অঞ্চলের ১৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডসমূহ অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এবং অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। এসকল ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট সমূহ এতটাই অপ্রশস্ত যে, বিপদকালীন সময়ে জরুরি এম্বুলেন্সও প্রবেশ করতে পারত না। এমনকি এই এলাকার বাড়ি-ঘর থেকে মৃতদেহ বাহিরে বের করাটাও খুবই কঠিন ছিল।
মো.আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রশস্ত রাস্তার গুরুত্ব অনুধাবন করেই অত্র এলাকার সাধারণ জনগণ একত্রিত হয়ে ভলান্টিয়ার হিসেবে এগিয়ে আসায় এবং সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এলাকার অপ্রশস্ত রাস্তাসমূহ প্রশস্ত করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, এই এলাকার বাড়ির মালিকগণ তথা ভলান্টিয়ার গণ স্বেচ্ছায় মোট ২৭টি রাস্তা বা রাস্তার অংশসমূহে প্রায় ১০ কিলোমিটার প্রশস্তকরণ করতে গিয়ে অনেককে নিজেদের মূল্যবান স্থাপনার আংশিক ভাঙতে হয়েছে, মূল্যবান জমিও ছাড়তে হয়েছে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, সাধারণ জনগণের অসাধারণ ক্ষমতাবলে স্বেচ্ছায় ১৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তা সমূহের প্রশস্তকরণের কাজ করা হয়েছে। এই কাজ করতে গিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন তথা বাংলাদেশ সরকারের কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এসকল রাস্তাসমূহ প্রশস্ত করতে গেলে জমি অধিগ্রহণ করতে হতো, অনেক টাকাও খরচ করতে হতো।
জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে এমন মহৎ উদ্যোগের জন্য ভলান্টিয়ার গণকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, শুধু ডিএনসিসির ৪ নম্বর অঞ্চলই নয় অন্যান্য সকল অঞ্চলের জন্য এমনকি ঢাকাসহ সারা দেশের জন্যই এটি একটি রোল মডেল, একটি অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, মাটি ও মানুষ বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ, এই সম্পদকে কাজে লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি করোনা মহামারির মধ্যেও জনগণের পাশে থেকে তাদের কল্যাণে কাজ করার জন্য ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলামকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতে ২০২০ সালে ঢাকা মহানগরীতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৩ গুণ বেশি হওয়ার কথা থাকলেও ডিএনসিসির সুযোগ্য মেয়রের নেতৃত্বে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করায় তা মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিলনা বললেই চলে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যেও জনকল্যাণকর কাজ অব্যাহত রাখায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
আলোচনা সভা শেষে ডিএনসিসির মেয়র স্থানীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে সাধারণ জনগণের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় প্রশস্ত করা বিভিন্ন রাস্তা পরিদর্শন করেন। আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা এবং স্থানীয় কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।