বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আজ রোববার সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধলপুরে সিটি করপোরেশন আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের একটি নারী ভোটকেন্দ্রে এক ঘণ্টায় মাত্র ২৫টি ভোট পড়েছে। এ কেন্দ্রে ভোটারসংখ্যা ২ হাজার ৫৫১।
একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আরেকটি নারী ভোটকেন্দ্রে এক ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৩২টি। কেন্দ্রটির ভোটার ২ হাজার ৩৬২ জন। এ দুটি কেন্দ্র ঢাকা-৫ সংসদীয় আসনের আওতাধীন। সিটি করপোরেশন আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে মোট ৪টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে দুটি পুরুষ ভোটকেন্দ্র ও দুটি নারী ভোটকেন্দ্র।
ভোট শুরুর পর এক ঘণ্টায় যে কেন্দ্রে ২৫টি ভোট পড়েছে, ওই কেন্দ্রের নম্বর ২৩। আর ৩২টি ভোট পড়েছে যে কেন্দ্রে, সেই কেন্দ্রের নম্বর ২৪। ২৪ নম্বর কেন্দ্রে ভোটকক্ষ রয়েছে ৬টি। এর মধ্যে সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত দুটি কক্ষে একটি ভোটও পড়েনি।
সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এ কেন্দ্রে অবস্থান করে দেখা গেছে, পুরুষ ভোটারের তুলনায় নারী ভোটার কম আসছেন। ভোটকেন্দ্রের সামনে কোনো সারি নেই। যাঁরাই আসছেন, তাঁরা নির্বিঘ্নে ভোট দিয়ে চলে যাচ্ছেন।
এ আসনে নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা স্থানীয়দের। কেন্দ্রে এই তিন প্রার্থীরই এজেন্ট আছেন। বাকি ১১ প্রার্থীর কোনো এজেন্ট চারটি কেন্দ্রের মধ্যে একটিতেও নেই।
ভোটকেন্দ্রের ভেতর ভোটারদের চাপ না থাকলেও কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর বিপুলসংখ্যক সমর্থকেরা ব্যাজ পরে অবস্থান নিয়েছেন।
ভোটারদের উপস্থিতি কম হওয়ার বিষয়ে ২৪ নম্বর কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবু সাদাদ মো. সায়েম বলেন, বাসাবাড়ির কাজ শেষ করে নারীদের কেন্দ্রে আসতে একটু সময় লাগে। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে ভোটারসংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারণা এই কর্মকর্তার।
এ কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন সদস্য বলেন, যে প্রার্থীদের এজেন্ট কেন্দ্রে ঢুকেছেন, তাঁদের কাউকেই মুঠোফোন নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৪টি ওয়ার্ড নিয়ে এ আসন গঠিত। ওয়ার্ডগুলো হলো—৪৮, ৪৯, ৫০, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯ ও ৭০। এ আসনের ভোটারসংখ্যা ৪ লাখ ৯০ হাজার ৭৬৪। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫১ হাজার ৫১৭ জন আর নারী ভোটার ২ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৪ জন। হিজড়া ভোটার ৩ জন। ভোটকেন্দ্র ১৮৭টি।
সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ধলপুর, গোলাপবাগ, নুরপুর, পাটেরবাগ, ইসলামবাগ, জনতাবাগ, স্মৃতিধারা, রায়েরবাগ, জনতাবাগ, দনিয়া, সরাই, রসুলপুর, কুতুবখালী, ছনটেক, শেখদী, গোবিন্দপুর, কাজলার পাড়, মাতুয়াইল, কোনাপাড়া, ডগাইর, মোমেনবাগ, রহমতপুর, মুসলিমনগর, মধুবাগ, খানবাড়ী, আদর্শবাগ, রায়েরবাগ, বামৈল, ডগাইর, সারুলিয়া এলাকা নিয়ে এ আসন গঠিত।
আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম। তিনি এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি, নির্বাচনে প্রার্থীও হননি।
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হারুনর রশীদ মুন্না (নৌকা প্রতীক)। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী মশিউর রহমান মোল্লা (ট্রাক প্রতীক) ও কামরুল হাসান (ঈগল প্রতীক)। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, এখানে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। বাকি প্রার্থীরা নামমাত্র।
এই তিনজনের মধ্যে নৌকার প্রার্থী হারুনর রশীদ যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিউর রহমান মোল্লা ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তাঁর বাবা এ আসনের চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লা। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল হাসান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি।
এ আসনের অন্য প্রার্থীরা হলেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আবু জাফর মো. হাবিব উল্লাহ (চেয়ার), বিএনএফের এস এম লিটন (টেলিভিশন), তৃণমূল বিএনপির আবু হানিফ (সোনালী আঁশ), ইসলামী ঐক্যজোটের আব্দুল কাইয়ূম (মিনার), এনপিপির আরিফুর রহমান (আম), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের নূরুল আমিন (ছড়ি), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মোশারফ হোসেন মিয়া (একতারা), বাংলাদেশ কংগ্রেসের সাইফুল আলম (ডাব), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সারোয়ার খান (কাঁঠাল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান (তরমুজ) ও হাফিজুর রহমান (কবুতর)।