অদম্য ইচ্ছা আর স্বপ্ন পূরনের লক্ষ নিয়ে পথচলা শুরু তানিয়া আফরিনের। ছোটবেলা থেকেই নিজেকে টেলিভিশনের পর্দায় উপস্থাপিকা হিসেবে দেখবেন ঠিক করেছিলেন। বাড়িতে মায়ের সামনে উপস্থাপিকা হিসেবে করতেন প্র্যাকটিস। শুরুর দিকে বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে উপস্থাপনা করছেন বহুবার। হাস্যোজ্জল মুখে সাবলিল ভঙিতে কার্যসূচী তুলে ধরার ব্যাপারটি সবার নজর কাড়ে নিমেষেই। ধীরে ধীরে চারপাশে প্রিয় হয়ে ওঠেন।
যে কোন বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা, সংস্কৃতি চর্চা, চলমান কোন ঘটনা, উন্নয়নশীল বিষয়গুলো থেকে শুরু কওে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে নিয়মিত লেখাপড়া করেন তানিয়া আফরিন। খবরের কাগজের আদ্যপান্ত নখদর্পনে রাখেন যেনো তার বাক্যগুলোর মাধ্যমে দর্শকদের কাছে গ্রহনযোগ্যতা বাড়ে। সেই সাথে আবৃত্তি চর্চার মাধ্যমে ঝালিয়ে নেন নিজের উচ্চারণ ও বাচনভঙ্গি। মার্জিত পোশাক-আশাকে চঞ্চল তরুনী তানিয়া আফরিন তুলে ধরেন যে কোন বিষয়। টেলিভিশনের পর্দায় বছর দশেক বিভিন্ন আয়োজনে দেখা যায় এই স্বপ্নকে পূজি করে চলা নারীকে।
বেসরকারী বেশ কয়েকটি চ্যানেলে নিয়মিত উপস্থাপনার কাজ করেন তানিয়া। নিজেকে কোন নিদ্দিষ্ট গন্ডিতে না বেধে ভিন্ন ভিন্ন ধাচের অনুষ্ঠানে নিজের দক্ষতা মেলে ধরতে আগ্রহী তানিয়া আফরিন।
বিশ্বব্যাপী আলোচনায় থাকা ইস্যু জেন্ডার সমতা তথা নারী অধিকার বিষয়ে সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠান নিয়মিত সঞ্চালনা করছেন তানিয়া। সেখানে আসা অতিথিদের সাথে নারী-পুরুষ বৈষম্য নিরসণে ও সমতা রক্ষায় করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন তানিয়া। উপস্থিত বুদ্ধি, সাবলিল বাঁচনভঙ্গি দিয়ে ইতিমধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন তিনি। নারীদের চলার পথে বাঁধার দিকগুলো এবং তা নিরসনে গঠনমূলক সমাধান তুলে ধরার মাধ্যমে ’নারীদের কথা’ অনুষ্ঠানকে সবার কাছে গ্রহনযোগ করে তুলেছেন তানিয়া আফরিন।
দিবসভিত্তিক আয়োজনগুলোতে আয়োজকদের পছন্দে সঞ্চালকের তালিকায় শীর্ষে থাকে তানিয়ার নাম। মা দিবসে প্রচারিত চ্যানেল নাইনের বিশেষ আয়োজন ’বৃদ্ধাশ্রমে মায়েদের গল্প’ অনুষ্ঠানে সন্তানদের থেকে দূরে থাকা মায়েদের অনুভুতিগুলো আন্তরিকতার সাথে পর্দায় তুলে ধরেন তানিয়া। তাঁর সান্যিদ্ধে বৃদ্ধাশ্রমে থাকা অসহায় মুখগুলো এমনভাবে নিজেদের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা-দূর্ঘটনার বর্ননা দিচ্ছিলেন যেনো খুব কাছের কারো সাথে দূ:খ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন। একজন উপস্থাপিকার সাফল্য এখানেই প্রকাশ পায়।
নিজ কাজে গভীর মনযোগ থাকায় উপস্থাপনার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দিকগুলোতে নিজেকে দক্ষ করে তুলতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সেরা উপস্থাকদের নিজস্ব স্টাইলগুলো পর্যবেক্ষণ করেন অবসর সময়ে। দর্শকদেরকে নিজের সেরা পারফরমেন্স উপহার দিতে সর্বদা কাজ করেন তিনি। পরিশ্রমের ফলস্বরুপ একের পর এক পুরস্কারের মাধ্যমে সবার ভালোবাসার প্রমাণ পাচ্ছেন তানিয়া। সম্প্রতি তাঁর ঝুলিতে যোগ হয়েছে ’ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ সম্প্রীতি ২০২৪’ এবং ’গ্লোবাল স্টার ওমেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৪’ পুরস্কার।
অদম্য ইচ্ছা থাকলে নিজের স্বপ্নকে বাস্ততে রুপ দেয়া সম্ভব সেটি নিজের পরিশ্রম আর চেষ্টা দিয়ে প্রমান করেছেন তানিয়া। এমন করেই উপস্থাপনা জগতে নিজের নামটি উজ্জল অক্ষরে লেখার পাশাপাশি দর্শকদের ভালো কাজ উপহার দিতে প্রতিশ্রতিবদ্ধ তানিয়া। ছবি
মোস্তাফিজুর রহমান মিন্ট