বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে তিন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির পরও দাম সহনীয় পর্যায়ে আসছে না। এখনো আগের মতো অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি বেড়েছে আলুর দামও। পাইকারি বাজারে ভারতীয় ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০-৮৫ টাকা দরে। খুচরা বাজারে আরও ১০-১৫ টাকা অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত।
পাইকারি বাজারে এ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭৫ টাকার বেশি দামে। ১৫ দিন আগে আলুর কেজি ৪০ থেকে ৪৫ হলেও শুক্রবার বিক্রি হয় ৭০-৮০ টাকা দরে। একইভাবে বাজারে শীতকালীন সবজিতে ঠাসা হলেও দাম ঊর্ধ্বমুখী। সরকার নির্ধারিত দাম কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকে। নির্ধারিত দাম বাজারে কার্যকর হয়েছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করারও যেন কেউ নেই। সাধারণ মানুষ অসহায় অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত সরকার পেঁয়াজ আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর সবচেয়ে বেশি আমদানি করা হচ্ছে চীন, পাকিস্তান ও মিয়ানমার থেকে। তবে এখন মিয়ানমার থেকে তেমন আসছে না। তবে এখনো ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেশি। পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকার বেশি দামে। আর চীন ও পাকিস্তানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। খুচরা বাজারে আরও অতিরিক্ত ১২-১৫ টাকা বেশি দামে।
শুক্রবার চাক্তাইয়ের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি গুদামে পেঁয়াজে ভর্তি। তবে ক্রেতা আগের মতো নেই। অনেকে গুদাম থেকে পেঁয়াজের বস্তা ফুটপাতেও থরে থরে সাজিয়ে রাখছেন কর্মচারীরা। পেঁয়াজ বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। ভারত থেকে আমদানি করা কিছু পেঁয়াজ রয়েছে। খুচরা বাজারে এসব পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার বেশি দামে। চীন থেকে আমদানি করা বড় জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকা কেজি দরে।
পাবনা ও ফরিদপুর থেকে আসা দেশীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। কিন্তু ৩ দিন আগে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের আড়তদার মহিউদ্দিন বলেন, চীন ও পাকিস্তান থেকে পেঁয়াজ আসায় দাম কিছুটা কমেছে। একটা সময় চট্টগ্রামের মানুষ দেশি পেঁয়াজ (মুড়িকাটা) খুব বেশি খেতেন না। তাদের পছন্দ ভারতের মাঝারি আকারের পেঁয়াজ। কিন্তু এবার রেকর্ড দামের কারণে দেশি পেঁয়াজের চাহিদাও বাড়ছে। দেশি পেঁয়াজের দাম বেশি পাওয়ায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।
এদিকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন হিমাগার থেকে আলুর সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও অদৃশ্য কারণে দাম বাড়ছে। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ও রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে বিক্রি কমিয়ে দিয়েছেন। বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকার নির্ধারিত দামে কোথাও বিক্রি হচ্ছে না। বাজারে কেজিপ্রতি পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে। আর নতুন আলু ৮০-৯০ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের আলুর আড়তদার বকুল মিয়া জানান, মহাজনরা আলুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে আমাদেরও অতিরিক্ত দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই।
বাজারদর : কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৬০-৭০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা, ফুলকপি ৭০-৭৫ টাকা, শিম ৮০-১০০ টাকা, করলা ৯০-১০০ টাকা। পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, দেশি টমেটো ৮০-৯০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গাজর ৭০-৮০ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লালশাক ২০ টাকা, পুঁইশাক ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা। বড় ও মাঝারি আকারের তেলাপিয়ার কেজি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, ছোট তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২১০ টাকা। আকারভেদে পাঙাশের কেজি ২০০ থেকে ২৪০ টাকা। প্রতি কেজি চাষের নলা-রুই বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায়। বড় আকারের কাতল প্রতি কেজি ৪৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। পাবদা আকারভেদে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, টেংরা ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, মাঝারি চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।