বঙ্গনিউজবিডি, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিস্তার ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে হরিপুর ইউনিয়নের কাশিমবাজারে গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসত বাড়ি। অবিরাম বর্ষন এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে বিভিন্ন এলাকায় জিও ব্যাগ ও বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। ভাঙনের মুখে হাজারও বসতবাড়ি। ভাঙনের শঙ্কায় নদী পাড়ে বসবাসরত হাজারও পরিবার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়সারা গোছের পদক্ষেপ থামাতে পারছে না তিস্তার ভাঙন। তিস্তার অব্যাহত ভাঙনে চলতি মৌসুমের নানা প্রজাতের ফসলসহ আবাদি জমি বিলিন হচ্ছে নদীগর্ভে। টানা ভাঙনে নাকাল হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের পরিবারগুলো।
গোটা বছরের ব্যবধানে হাজারও একর আবাদি জমিসহ দেড় হাজার বসত বাড়ি নদীগভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে হাজারও একর ফসলি জমি ও বসতবাড়ি। বিশেষ করে উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের উজান বোচাগাড়ি, পাঁচপীর খেয়াঘাট, তারাপুর ইউনিয়নের খোদ্দা, লাঠশালা ও হরিপুর ইউনিয়নের কাশিম বাজার খেয়াঘাটসহ কাপাসিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত রাক্ষুসি তিস্তানদী এখন তার গতিপথ হারিয়ে এবং পলি জমে একাধিক শাখা নদীতে পরিনত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ওইসব শাখা নদীতে এখন ¯্রােত দেখা দিয়েছে। স্্েরাতের কারনে উজানে ভাঙনে তিস্তার বালু চরের সবুজের সমারহ ও বসতবাড়ি বিলিন হচ্ছে নদীগর্ভে। বর্তমানে তিস্তার চরাঞ্চলে বাদাম, বেগুন, মরিচসহ নানাবিধ উঠতি ফসলের সমাহার দেখা দিয়েছে। কিন্তু সর্বনাশা তিস্তা সে ফসল ঘরে তুলতে দিচ্ছে না।
কথা হয় কাশিমবাজার গ্রামের স্কুল শিক্ষক রফিকুল ইসলাম রঞ্জু মিয়ার সাথে। তিনি বলেন গত সাত দিনের ব্যাবধানে কাশিমবাজার গ্রামের কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে নদী গর্ভে। তিনি বলেন যে হারে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে, তাতে করে আগামী ১০দিনের মধ্যে ঐতিহ্যবাহি নাজিমাবাদ বিএল উচ্চ বিদ্যালয় রক্ষা করা যাবে না। তিনি বিদ্যালয়টি রক্ষা করার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম জিমি জানান, তার ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় ভাঙন রোধে এখন পর্যন্ত জোরালো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। গত সাতদিনের ব্যবধানে, কাশিমবাজার, লখিয়ারপাড়া, মাদারিপাড়া, চরচরিতাবাড়ি, চরিতাবাড়ি গ্রামে পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন কবলিত পরিবাগুলোর আশ্রয় নেয়ারমত জায়গা নেই ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল মারুফ জানান, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার চন্ডিপুর, তারাপুর, হরিপুর, কাপাসিয়া ও শ্রীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনের বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।