বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : দিনাজপুরের খানসামায় নার্সের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে খানসামা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আমতলী এলাকার ফয়েজ উদ্দিনের স্ত্রী ৩৭ বছর বয়সী ফতেজা বেগমের প্রসবব্যথা শুরু হয়।
এ সময় তাকে খানসামা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যান স্বজনরা। রাত ১০টায় ব্যথা বাড়তে থাকলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বদলি চান রোগীর পরিবারের লোকজন। কিন্তু এখানেই ডেলিভারি করা যাবে বলে জানান সহকারী নার্স আফরোজা।
নার্সের কথামতো ফতেজাকে হাসপাতালেই রেখে দেন স্বজনরা। এরপর প্রসূতিকে একটি ইনজেকশন পুশ করা হয়। রাত ১টার দিকে তিনি সন্তান প্রসব করেন। কিছুক্ষণ পরই নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন নার্স।
প্রসূতির বোন সিদ্দিকা আক্তার বলেন, জরায়ু নরম আছে বলে আমাকে জানান কেন্দ্রের সহকারী নার্স আফরোজা। একই সঙ্গে এখানেই নরমাল ডেলিভারি হবে বলে জানান। কিন্তু বোনের বয়স বেশি বলে ঝুঁকি নিতে চাই না বলে আমি জানাই। ছেড়ে দিতেও বলি। এরপরও নার্স আমাদের ছাড়েননি।
তিনি আরো বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে ডেলিভারি কক্ষে নেয়া হয়। এরপর আমাদের দুই বোনকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। মাত্র একজন নার্স ও একজন আয়া দায়িত্বে থাকেন। কিছুক্ষণ পর ডেলিভারি কক্ষ থেকে বের করে আবার ঢোকানো হয়। তখনো আমাদের ছেড়ে দিতে বলি। কিন্তু সহকারী নার্স বলেন আমরাই পারবো।
সিদ্দিকা বলেন, আমার বোন প্রসবব্যথা সইতে না পেরে অনেক চিৎকার করতে থাকেন। এরপর একটি ইনজেকশন পুশ করেন সহকারী নার্সরা। এ ইনজেকশন দেওয়ার পরপরই ব্যথা আরো বাড়তে থাকে। রাত ১টার দিকে বাচ্চা প্রসব হয়। আমরা দেখি বাচ্চার মুখে কি যেন পাইপ দিয়ে হাওয়া দিচ্ছেন। এরপর পেটে ডলাডলি করতে থাকেন।
কিছুক্ষণ পর সহকারী নার্স বললেন- গাড়ি ঠিক করেন দিনাজপুর নিয়ে যেতে হবে। এরপর বলেন ‘প্রসূতি মৃত সন্তান প্রসব করেছে’। কিন্তু আমি দেখছি শিশুটি জীবিত ছিল আর পেটটা শুধু দুক দুক করছিল। ভুল চিকিৎসায় মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা বিচার চাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাসানুর রহমান চৌধুরী বলেন, প্রসবের আগেই শিশু মারা যায়। এরপরও অভিযোগের ভিত্তিতে সহকারী নার্স আফরোজা আক্তারকে বদলি করা হয়েছে। এ হাসপাতালে চিকিৎসকের পদ থাকলেও কাউকে পদায়ন দেওয়া হয়নি। এখন থেকে প্রসূতির প্রসব সেবা বন্ধ থাকবে। শুধু চেকআপ করা হবে।